তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও এসএফআইয়ের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল উত্তরপাড়া কলেজের সামনে। অভিযোগ, এসএফআইয়ের মিছিল চলাকালীন তাদের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। এরপরই হাতাহাতি, লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হওয়া, রাস্তায় ফেলে চুলের মুঠি ধরে মার-অভিযোগের তালিকা থেকে বাদ পড়েনি কিছুই। দু’ পক্ষই দু’পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে।
এসএফআই সমর্থকদের অভিযোগ, এদিন তারা ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও হুগলিতে মেডিকেল কলেজ তৈরি-সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে উত্তরপাড়া স্টেশন থেকে উত্তরপাড়া কলেজ স্ট্যান্ড অবধি মিছিল করেন। মিছিল শেষে একটি সভা করার কথা ছিল। অভিযোগ, সেই সভায় পিছনের দিকে থাকা বেশ কিছু এসএফআই সমর্থককে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনায় টিএমসিপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে এসএফআই।
যদিও টিএমসিপি সমর্থকদের দাবি, এসএফআই সমর্থকরা কলেজে এসে ঝামেলা করে। কলেজে সেই সময় পরীক্ষা চলছিল। এর জেরেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, ক্রিকেটের ব্যাট, লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় তাদের। এমন কী পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তাদের ভূমিকা নিষ্ক্রিয় ছিল বলেই অভিযোগ। এসএফআইয়ের সভার অস্থায়ী মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থলে হাজির হয় উত্তরপাড়া থানার পুলিশের বিশাল বাহিনী।
এসএফআইয়ের এক সদস্য সায়ন্তন ঘোষ বলেন, “আমাদের কলেজের সামনে দিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিল গিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা চলছি। সেই সভায় পিছনের দিকে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেরা। কলেজের সামনে বেধড়ক মারে। আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের উপরও চড়াও হয়। প্রথমে ব্যাট দিয়ে মারা হয়। তারপর ইট, কাঠ দিয়ে মারা হয়। আমরা বার বার চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিটা হোক। আমরা সে পথেই চলছিলাম। আজ মাননীয়ার যুগে আমরা তৃণমূলকে আক্রমণ করছি নাকি তৃণমূল আমাদের উপর হামলা করছে এ তো জলের মতো পরিষ্কার। এ আর কাউকে বলার প্রয়োজন হয় না।”
অন্যদিকে টিএমসিপির সদস্য প্রদ্যোৎ দাসের দাবি, “এসএফআইয়ের গুন্ডারা মেরে আমার এক বন্ধু পা থেঁতলে দিয়েছে। কারও মাথায় মেরেছে, কাউকে ফেলে মেরেছে। আজ ওরা কলেজে হামলা করতে এসেছিল। ছাত্র ছাত্রীরা শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা দিচ্ছে। সেটা নষ্ট করা ওদের লক্ষ্য ছিল। আমরা সেটা কোনওভাবেই বরদাস্ত করিনি।
এ প্রসঙ্গে উত্তরপাড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী বোর্ডের সদস্য তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, এসএফআইয়ের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। পায়ের নীচে মাটি তো নেই, তাই এসব গল্প তৈরি করছে। এই কলেজের একজন অধ্যাপক ছিলেন। এখন আছেন কি না জানি না। উনিই বাচ্চা বাচ্চা ছেলেগুলোকে উষ্কে নিয়ে এসেছেন। শান্তিপূর্ণ এলাকায় অশান্তি পাকাতে এসব ছল।”
Be the first to comment