গোয়ার মাটিতে হু হু করে বাড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত কয়েক মাসে সৈকত রাজ্যে বিজেপির অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জার হিসাবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছে এরাজ্যের শাসকদল। গোয়ার বেশ কয়েকজন প্রথম সারির রাজনীতিবিদ ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গোয়ায় তৃণমূলের এই উত্থানে বিজেপির পাশাপাশি প্রমাদ গুনছে সেরাজ্যের বিরোধী দলগুলিও। সম্ভবত সেকারণেই আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবার বিজেপিকে ছেড়ে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসকে।
কেজরিওয়ালের বক্তব্য, গোয়ার রাজনীতিতে তৃণমূল কোনও ফ্যাক্টরই নয়। অকারণেই তৃণমূলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আম আদমি পার্টির সুপ্রিমোর বক্তব্য, “আমার মনে হয় তৃণমূলকে অকারণে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমার মনে হয় তৃণমূলের এক শতাংশ ভোটও নেই। তৃণমূল গোয়ায় এসেছে মাত্র মাস তিনেক আগে। এভাবে গণতন্ত্রে সাফল্য আসে না। সাফল্যের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, মানুষের জন্য কাজ করতে হয়।” কেজরির এই বক্তব্যের পালটা এসেছে তৃণমূলের তরফ থেকেও। এরাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, গোয়ার রাজনীতিতে ঝড়ের গতিতে এগোচ্ছে তৃণমূল। কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিই সেখানে অপ্রাসঙ্গিক।
বস্তুত, গোয়ায় গত বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তি ছিল কংগ্রেস। ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে বেশি আসনও পায় কংগ্রেসই। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতায় কংগ্রেস সেবার সরকার গড়তে পারেনি। তারপর থেকেই সেরাজ্যে হাত শিবিরে ভাঙন ধরা শুরু করেছে। বিধানসভায় ১৭টি আসন পাওয়া কংগ্রেসের হাতে বর্তমানে বিধায়ক আছেন মোটে দু’জন। বাকি বিধায়কদের একটা বড় অংশ যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। একাধিক বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
ফলে গোয়ার মাটিতে বিরোধী পরিসরে শক্তি বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের। সম্ভবত সেখানেই সমস্যা আম আদমি পার্টির। কারণ, আপও বেশ কিছুদিন ধরেই সেই রাজ্যে শক্তিবৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে তেমন সুবিধা করতে পারেনি তাঁরা। আবার এ বছর তৃণমূল যেখানে মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির মতো দলের সঙ্গে জোট গড়ে ফেলেছে, সেখানে আপ সঙ্গীহীন। বস্তুত গোয়ায় তৃণমূলের শক্তি যত বাড়ছে আপ-সহ অন্য বিরোধীদের ভাল ফল করার সম্ভাবনাও তত কমছে। হঠাৎ কেজরিওয়ালের তৃণমূলকে আক্রমণ সম্ভবত সেকারণেই।
Be the first to comment