কলকাতায় আরও এক ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলল। এই নিয়ে বাংলায় মোট পাঁচজনের শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ল। আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই যুবক। বেসরকারি ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ বছরের ওই যুবক ডাবলিনে কাজ করেন। গত পাঁচ বছর ধরে আয়ারল্যান্ডে থাকছিলেন তিনি। গত শুক্রবার কলকাতায় আসেন। ম্যানচেস্টার থেকে আবু ধাবি ও দিল্লি হয়ে কলকাতায় ফেরেন তিনি।
এরপর দিন তিনেক আগে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সন্দেহ হলে জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিকেল জেনোমিক্সে নমুনা পাঠানো হয়। মাল্টি স্পেশালিটি ওই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের রিপোর্ট তারা হাতে পেয়েছে। রিপোর্ট পজিটিভ। ওই বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জানান, আমরা স্বাস্থ্য দফতর মারফৎ জানতে পেরেছি যে যুবকের জেনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল, রিপোর্ট পজিটিভ। ওই যুবক এখানে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই কোভিড ইউনিটে একটি পৃথক রুমে রয়েছে। সমস্ত রকম কোভিড প্রোটোকল মেনেই তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, কলকাতায় ফেরার পরই আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য কেন্দ্রের যে নিয়ম তা মেনেই আরটিপিসিআর করা হয়েছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে নিয়ম মেনে আটদিন হোম আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে কেন্দ্র। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে দেখানো হয়, ওমিক্রনের বিপদ ঠিক কতটা। পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রস্তুতির নিরিখে কোন রাজ্য কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তাও দেখানো হয় বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর।
করোনা পরীক্ষায় দেশের মধ্যে পিছনের সারিতে রয়েছে এ রাজ্য। প্রতি ১০ লক্ষে কত জনের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, সেই হিসেব করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গত দু’সপ্তাহ ধরে পশ্চিমবঙ্গ একেবারে পিছনের সারিতে রয়েছে। সবচেয়ে কম টেস্ট হয়েছে যে পাঁচটি রাজ্যে, পশ্চিমবঙ্গ তার মধ্যে অন্যতম।
এই অবস্থায় দ্রুত পরীক্ষা বাড়তে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। শুক্রবার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে স্বাস্থ্য সচিব নির্দেশ দেন, নমুনা পরীক্ষা যেন বাড়ানো হয়। একই সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার কিটও বেশি করে কেনা, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া কিট রয়েছে কি না তাও দেখতে বলা হয়। এ দিন আধিকারিকদের কাছে স্বাস্থ্য সচিব জানতে চান, ওষুধের মজুত কেমন রয়েছে রাজ্যে। পর্যাপ্ত ওষুধের জোগান রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
স্বাস্থ্য সচিব উল্লেখ করেছেন, দ্বিতীয় ডোজ়ের সংখ্যা বাড়াতেই হবে। টিকাকরণ সংক্রান্ত প্রচারে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, অনেক সময় বিদেশ ফেরৎ যাত্রীদের একাংশ দেশে ফেরার সপ্তাহখানেক পরে পজিটিভ হচ্ছেন। তাই নজরদারি বাড়াতে হবে। ওমিক্রনের নিরিখে হোম আইসোলেশনে গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
১৫ ডিসেম্বর প্রথম রাজ্যে একজন ওমিক্রন পজিটিভ ধরা পড়েন। এরপর ২০ ডিসেম্বর আরও এক ওমিক্রন পজিটিভের খোঁজ মেলে। ২২ ডিসেম্বর একইসঙ্গে দু’জন ওমিক্রন পজিটিভ হন। শুক্রবার আরও একজনের পজিটিভ হওয়ার খোঁজ মিলল।
Be the first to comment