মাদার টেরিজার হাতে গড়া সংস্থা মিশনারিজ অফ চ্যারিটির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিল কেন্দ্র৷ এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ টুইটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি ৷ মমতা লেখেন, ক্রিসমাসের সময় কেন্দ্রীয় সরকার মাদার টেরিজার সংস্থার সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছে৷ ওদের ২২ হাজার রোগী এবং কর্মচারীর ওষুধ সরবরাহ এবং খাবারের জোগান নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ আইন আইনের মতো চলবে৷ কিন্তু মনুষ্যত্বের জায়গা থেকে বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার ৷
সরব হয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র-ও। টুইটারে গোটা ঘটনার কথা জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রের এহেন পদক্ষেপে তিনিও স্তম্ভিত বলে উল্লেখ করেছেন টুইটে। বাম নেতা আরও জানিয়েছেন, শুধু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নয়, নগদ ব্যবহারেরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র।
বড়দিনের উৎসব চলছে ৷ এই সময় কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে ‘গরিব থেকে গরিব মানুষের কাছে নিষ্ঠুর বড়দিনের উপহার’ বলে বিবৃতি দিয়ে জানায় মিশনারি কর্তৃপক্ষ ৷ সংবাদমাধ্যম ‘স্ক্রোল’ জানিয়েছে, মিশনারি অফ চ্যারিটির ভাই-বোনেরা হাজার হাজার নিপীড়িত মানুষের সেবায় পৌঁছে যায়। তাঁরা এমন এমন মানুষের সংস্পর্শে আসে যাঁদের ধারেকাছেও কেউ ঘেঁষতে চায় না ৷ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের উপর এই সাম্প্রতিক আঘাত সেই সমাজসেবামূলক কাজে ব্যাঘাত ঘটাবে৷ ভারতের গরিব থেকে গরিব মানুষ অসুবিধায় পড়বেন ৷
অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি সামনে আসেনি ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে কেন কেন্দ্রকে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিতে হল? কেন বড়দিনের মতো উৎসবের সময় মাদারের সংস্থার সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হল? উত্তর অধরা ৷ কিন্তু একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গুজরাত সরকারের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর ফলেই মিশনারিজ অফ চ্যারিটির অ্যাকাউন্টগুলো ফ্রিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র ৷ মাদারের সংস্থার বিরুদ্ধে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ উঠেছে ৷ আরও অভিযোগ, হোমে আশ্রয় নেওয়া মেয়েদের জোর করে খ্রিস্টান ধর্মগ্রহণে বাধ্য করে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি ৷ এই অভিযোগের তদন্ত করছে গুজরাত পুলিস ৷
গুজরাতের বদোদরার জেলা সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক মায়াঙ্ক ত্রিবেদী সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, বিভিন্ন চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অথরিটির অভিযোগের ভিত্তিতে মাদারের সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে পুলিস ৷ বহু জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, মিশনারিজ অফ চ্যারিটি নিয়মিত হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করছে ৷ মেয়েদের বাইবেল পড়তে বাধ্য করে ৷ অল্পবয়সী মেয়েদের জোর করে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করে৷ মায়াঙ্ক ত্রিবেদী নিজেও একটি থানায় মিশনারিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ ধর্মান্তরণের যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছে মিশনারিজ কর্তৃপক্ষ৷ জানিয়েছে, ভারতে মোট জনসংখ্যা ২.৩ শতাংশ হল খ্রিষ্টান ৷ ধর্মান্তরণের অভিযোগ সত্যি হলে খ্রিষ্টানদের জনসংখ্যা বেড়ে যেত ৷
Be the first to comment