শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলায় সবুজ সঙ্কেত কলকাতা হাইকোর্টের। এরই মধ্যে বুধবার বাবুঘাটে তীর্থযাত্রীদের বিশ্রাম শিবির ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি সেখান থেকে খতিয়ে দেখবেন তিনি। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষেও সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। করোনার কথা মাথায় রেখে পৃথক মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। একটি মঞ্চে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি অতিথিরা থাকবেন আলাদা মঞ্চে।
তবে সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গঙ্গাসাগরে ট্রানজিট ক্যাম্পে মোট ৩৫ জন করোনা পজিটিভের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের সেফ হোমে পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাভাবিকভাবেই মঙ্গলবার বিকালের পর এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে। সব বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গাসাগর মেলা যাওয়ার আগে আউটরাম ঘাটে ভিড় জমাচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু কোথাও কোনও সতর্কতার ন্যূনতম চিহ্ন দেখা যায়নি। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য়বিধি, নেই সামাজিক দূরত্ববিধি মানার বিষয়টিও। এমনকি অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না। ক্যামেরা দেখে অনেকে আবার নিজের অরক্ষিত মুখ ঢেকেছেন গামছা দিয়েই। অনেককে আবার প্রশ্ন করা হলে দিয়েছেন অদ্ভূত সব জবাবও। এরকমই এক জনের কথায়, “করোনা পাপীদের হয়।”
গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনেও দেখা গিয়েছে অসচেতনতার ছবি। মেলায় দূরত্ববিধি শিকেয়। মাস্ক ছাড়াই স্নানের জন্য সমুদ্রতটে ভিড় জমাতে দেখা গিয়েছে পুণ্যার্থীদের। এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুণ্যার্থীদেরই অনেকে। গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গনজুড়ে কোভিড সচেতনতার জন্য পুণ্যার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে মাস্ক।
কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য ভিন রাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাষায় ঘোষনা চলছে মাইকে। সমুদ্র স্নানে ভিড় রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। তারপরও সমুদ্রতটে পুণ্যার্থীদের ভিড় আটকানো গেলো না। মুখে মাস্ক ছাড়াই স্নানের জন্য সকাল থেকে সমুদ্রতটে ভিড় জমাচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। কোথাও মানা হল না দূরত্ব বিধি। আবার অনেক পুণ্যার্থী ক্যামেরা দেখেই মাস্ক পোরতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন। আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারাও। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমুদ্রতটে সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই গঙ্গাসাগর মেলায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পুরনো বেশ কিছু শর্ত অদলবদল করে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, গোটা গঙ্গাসাগর প্রাঙ্গনটিই নোটিফায়েড এরিয়া ঘোষণা করতে হবে। অর্থাৎ সেখানে যে কোনও মুহূর্তেই বিধি আরোপ করতে পারে রাজ্য। পাশাপাশি পুরনো কমিটি বাতিল করে দুই সদস্যের নতুন কমিটিও গঠন করেছে হাইকোর্ট।
জোড়া টিকা আর শংসাপত্র না থাকলে কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট না থাকলে, কাউকেই প্রবেশে ছাড়পত্র নয়। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে হবে মুখ্যসচিবকে।
Be the first to comment