মূল কাঠামো অটুট রেখেই ৩১ মার্চের মধ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন সেরে নিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। খুব স্বাভাবিকভাবেই দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী থাকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তবে দলকে সর্বভারতীয় পরিকাঠামো দিতে বিভিন্ন স্তরে কিছু রদবদল হতে পারে। তবে এবিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এমন দু’একটি বিষয় রটেছে, যা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। দলের শীর্ষনেতৃত্ব এখন নির্বাচন কমিশনের নিয়মনীতি মেনে সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব শেষ করে ফেলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দল।
এদিকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্ক প্রায় থেমে এসেছে। সাংসদদের চিঠিটি দক্ষতার সঙ্গে সামলেছে শীর্ষনেতৃত্ব। কল্যাণের একাধিক আচরণ নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিটি দিয়েছেন এগারোজন সাংসদ। এতে দু’জন রাজ্যসভা এবং ন’জন লোকসভা সদস্য রয়েছেন। লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই কল্যাণবিরোধী চিঠি ঠেকাতে নামার আগেই ন’জন লোকসভা সাংসদ শামিল হয়েছেন।
এর মধ্যে দলের সেরা সাংসদ সৌগত রায়ও রয়েছেন। চিঠিটি দলনেত্রীর কাছেও গিয়েছে। কিন্তু এটি বাইরে এলে যেহেতু কল্যাণের অস্বস্তি বাড়বে বা জলঘোলা বাড়বে, তাই বিষয়বস্তু স্বয়ং সুপ্রিমো জেনে গেলেও চিঠিটি আপাতত ইস্যু করা হচ্ছে না। চিঠি আদৌ আছে না নেই, এই মায়ার খেলার মধ্যেই বিতর্কে লাগাম টানছেন দলনেত্রী। তবে তাঁর বিষয়গুলি জানা হয়ে গিয়েছে। নেত্রীর কথাকে মর্যাদা দিয়ে আর কোনও নেতা এসব নিয়ে মুখ খোলেননি।
কিন্তু এর মধ্যে মদন মিত্র হঠাৎ দু-তিনদিন ধরে শীর্ষনেতৃত্বকে খোঁচা দিয়ে বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। এমনকী শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। দল বিরক্ত হলেও এনিয়ে পালটা কিছু বলে মদনকে অকারণ গুরুত্ব দেওয়া হবে কি না, সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এদিন কড়াভাবে মদনকে বলে দিয়েছেন, দলকে বিব্রত করা কোনওরকম বিবৃতি বরদাস্ত করা হবে না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরে মদন এদিন আবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে বেশি অসংলগ্ন কথা কিছু বলেননি। তবে এরপর মদনের কিছু বিতর্কিত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বিজেপি পুরপিতা সজল ঘোষ। এনিয়ে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মন্তব্যের বেশি কিছু হয়নি। শ্রীরামপুর এলাকায় কিছু পোস্টার নিয়ে অবশ্য সামান্য জলঘোলা হয়। উত্তর কলকাতার পোস্তায় একটি ক্লাবের ব্যানারে করোনা রুখতে ডায়মন্ডহারবার মডেল চালুর দাবি তোলা হয়েছে।
তৃণমূলের বক্তব্য, দল ঠিকঠাক আছে। দল এখন অনেক বড়। চলার পথে দুএকটি দ্বিমত সর্বত্র হয়। কিন্তু তাই বলে দলের মূল আধার আদৌ বিঘ্নিত হয় না। অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দু’দিন আগেই বিজেপির অমিত মালব্যের টুইটের জবাবে পালটা বিজেপির গোষ্ঠীবাজিকে আক্রমণ করে লিখেছেন, “তৃণমূল একটি বৃহৎ সুখী পরিবার যেখানে স্বাভাবিক জীবনের প্রতিটি স্পন্দন বিরাজমান।” এর মধ্যে ফেসবুকে একটি পোস্ট নজরে আসে। সেখানে তৃণমূলকর্মীদের মনের কথা বলার হেল্পলাইন চালুর কথা বলা হয়েছে। তবে দলের তরফ থেকে বলে দেওয়া হয় যে এই ধরনের কোনও বারোয়ারি হেল্পলাইন দল চালু করেনি। এর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। দলীয় সূত্রে খবর, আসন্ন পুরভোটের এলাকাগুলিতে তৃণমূল প্রার্থীরা বিধি মেনে জনসংযোগ চালাচ্ছেন। মানুষের সাড়া খুব ভাল।
Be the first to comment