প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো ঘিরে কেন্দ্র–রাজ্য বিবাদের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। উভয় পক্ষ থেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া আসছে। রাজ্যের বক্তব্য, প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলো বাদ যাওয়ার পিছনে কেন্দ্রের রাজনৈতিক সুরসুড়ি রয়েছে। যদিও কেন্দ্র বলছে, এমন কিছুই নয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং স্পষ্ট জানিয়েছেন, পৃথক একটি প্যানেল এই ট্যাবলোগুলিকে বাছাই করে। কিন্ত ট্য়াবলো বিতর্ক তবু পিছু ছাড়ছে না। বুধবার কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যেও সেই কথা আবারও উঠে আসে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, নেতাজির নামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “নেতাজি নিয়ে রাজনীতি কিসের? নেতাজি সম্পর্কে যদি সত্যিই শ্রদ্ধা থাকে তাহলে নেতাজির জীবন , স্বাধীনতা সংগ্রামের ট্যাবলো… সেটিকে অনুমতি দিতে বাধা কোথায়? এটি তো কোনও তৃণমূল কংগ্রেস লেখা ট্যাবলো নয়। এর মধ্যে রাজনীতি কী করে আসে! সারা বিশ্বের লোকের কাছে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে নেতাজির সম্পর্কে ভারতীয়দের ধারণা, সচেতনতা দেখানো যেত। যদি রাজনীতি কেউ করে থাকে, তা বিজেপি করছে। নেতাজির নামকে কলঙ্ক করার চেষ্টা করছে।” উল্লেখ্য, দিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসে জায়গা না পাওয়ার পর নেতাজিকে নিয়ে ওই ট্যাবলো রাজ্যের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত করার কথা রয়েছে।
একইসঙ্গে নেতাজি সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশ্যে আনার বিষয় নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, “এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের দাবি। রাজ্য সরকার যা ফাইল ছিল সব প্রকাশ্যে এনেছে। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের দাবি, প্রকাশ করা হোক সবকিছু। নেতাজি সারা ভারতের, বিশ্বের কিন্তু তিনি বাংলা থেকে গিয়েছেন, এটা আমাদের জন্য গর্বের। তাঁকে নিয়ে গর্ব করব না, ট্যাবলো করব না?”
বিগত কিছুদিন ধরেই রাজ্যে জোর চর্চায় রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার মডেল। বিরোধীরা সেই নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন অনেক সময়ে। কিন্তু সে সব বিরোধী কণ্ঠস্বরকে বিশেষ আমল দিতে চাইছেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, “ডায়মন্ড হারবারে পজিটিভিটি রেট কমছে। আমরা আরও কিছুদিন দেখব পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারের একটি গ্রামীণ এলাকার সঙ্গে কলকাতাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। কলকাতা একটি বড় শহর। সারা রাজ্য থেকে এখানে লোকজন আসেন। পৃথিবীর যেখানে জনঘনত্ব বেশি সেখানেই পজিটিভিটি রেট বেশি থাকে।”
একইসঙ্গে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর টুইট নিয়েও বুধবার সরব হন কলকাতার মহানাগরিক। বলেন, “এটা অন্য কিছু নয়। যদি কেউ নিজের লোকসভা আসন নিয়ে ভাল কিছু করেন, তাহলে দেশটাই ভালো হয়ে যায়। এটা নিয়ে রাজনীতি করার কোনও অবকাশ নেই।”
Be the first to comment