লুঠের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল দু’জনকে। একজন পুলিশের গাড়ি চালান। অন্যজন সিভিক ভলান্টিয়ার। ট্রাক চালকের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে। এরপরই বড়বাজার থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম শেখ আকবর ও শেখ জামির মণ্ডল। দু’জনই পার্ক সার্কাস ট্রাফিক গার্ডে কাজ করেন।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার। জানা গিয়েছে, এদিন মধ্য কলকাতার আর্মেনিয়ান স্ট্রিট ক্রসিংয়ে কলকাতা পুলিশের গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে চেকিং করছিলেন। অভিযোগ, ওসি বা অ্যাডিশনাল ওসিরা যে লাল গাড়ি ব্যবহার করেন, সেই গাড়ি নিয়ে শেখ আকবর ও শেখ জামির মণ্ডল গাড়ির চেকিং করছিলেন বলে অভিযোগ।
একের পর এক ট্রাক দাঁড় করিয়ে তাঁরা একেবারে পুলিশি হাবভাব নিয়ে নানা প্রশ্ন করতে শুরু করেন চালকদের বলে অভিযোগ। বিভিন্ন নথি দেখতে চান। কারও কাছে আবার মিথ্যা কেস দিয়ে টাকাও নেন বলে অভিযোগ। এরকমই এক ট্রাক চালককে চেপে ধরেন অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশের গাড়ির চালক। ট্রাক চালকের আধার কার্ড, অন্যান্য নথিপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমনকী চালকের সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা ও সোনার গয়নাও হাতিয়ে নেন। ভয় দেখিয়ে সে সব নিয়ে শেখ জামির মণ্ডল ও শেখ আকবর চম্পট দেন বলে অভিযোগ।
এদিকে সর্বস্ব খুইয়ে ট্রাক চালকও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানাতে ছোটেন থানায়। বড়বাজার থানায় গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। এভাবে লুঠপাটের কারণ জানতে চান। স্পষ্ট বলে দেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স তাঁর ফেরত চাই। এদিকে চালকের বক্তব্য শুনে তো চোখ কপালে ওঠে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের। বুঝে যান, কিছু একটা গোলমাল হয়েছে। তাঁরা সন্দেহ করেন, এ কাজ কোনও পুলিশের নয়। পুলিশ পরিচয় ভাঙিয়ে কেউ এমনটা করে থাকতে পারেন।
সঙ্গে সঙ্গে ওই চালককে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় বড়বাজার থানার একটি টিম। সেখানকার সিসিটিভি খতিয়ে দেখে তারা। সেই ফুটেজেই ধরা পড়ে কীর্তিমানদের আসল কীর্তি। পুলিশের লাল গাড়ি নিয়ে একের পর এক গাড়ি দাঁড় করিয়ে বিরাট জুলুমবাজি। খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে পার্ক সার্কাস ট্রাফিক গার্ডের গাড়ি সেটি। সেখান থেকেই ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ও পুলিশের গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যদিকে ধৃতদের ব্যবহৃত গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। অর্থাৎ পুলিশই পুলিশের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে। শেখ আকবর ও শেখ জামির মণ্ডলের নামে জামিন অযোগ্য ধারায় লুঠপাটের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে। বড়বাজার থানার পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে।
Be the first to comment