ট্যাবলো বিতর্ক থামছে না। প্রজাতন্ত্র দিবসে কেন বাতিল নেতাজির ট্যাবলো তা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছেই। এ বার, ট্যাবলো বিতর্কে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মজয়ন্তী দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠানে সরাসরি কেন্দ্রকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
রেড রোড থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা ট্যাবলো থাকলে কী ক্ষতি হত? নেতাজির ট্যাবলো কেন বাতিল হল, তার কোনও স্পষ্ট কারণ আপনারা দেননি। জানাননি ট্যাবলো কেন বাতিল করা হয়েছে। আপনারা বাতিল করেছেন, খুব ভাল কথা! ওই ট্যাবলো আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডে প্রদর্শিত হবে।
মমতার আরও সংযোজন, আগেরবারও রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজিকে নিয়ে একটা ট্যাবলো করে পাঠিয়েছিলাম। সেটাও বাতিল করে দিয়েছিল। এত হিংসা! প্রত্যেকবার ফার্স্ট হয় বাংলা, ট্যাবলো প্রদর্শনীতে। তাই বাতিলই করে দিল! কী হত একটা ট্যাবলো থাকলে! ট্যাবলো বাতিল করলেন, তারপর নেতাজির মূর্তি গড়লেন। শুধু মূর্তি গড়েই কি দায়িত্ব শেষ হয়ে গেল! আপনাদের মতো আর্টিফিশিয়াল মূর্তি নয়, আমাদের রেড রোডের মূর্তি এসে দেখে যান। এই মূর্তি সজীব, জীবন্ত, আমরা বাঁচার আশা খুঁজে পাই এই মূর্তি দেখে।
বস্তুত, ট্যাবলো বিতর্কের জল অনেকদূর গড়িয়েছে। নেতাজির ট্যাবলো বিতর্কের জেরে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। কেন প্রজাতন্ত্র দিবসে বাদ পড়ল নেতাজির ট্যাবলো? রাজ্যের তৈরি ট্যাবলো কেন বাদ দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলেই দায়ের হয়েছে এই মামলা। মামলাকারীর দাবি, কেন বাদ দেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। নেতাজির ট্যাবলো অবিলম্বে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা উত্তর দিয়েছেন রাজনাথও। প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাঁর চিঠিতে লেখেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে আমরা শ্রদ্ধা করি। সেই সম্মান স্মারক হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৩ জানুয়ারি পরাক্রম দিবস ঘোষণা করেছেন। এবার থেকে গণতন্ত্র দিবসের উদযাপনের শুরুই হবে ২৩ জানুয়ারি থেকে। চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমান সরকার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’ ট্যাবলো বাদ দেওয়ার অর্থ যে নেতাজিকে অসম্মান নয়, সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন তিনি।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোর অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হয়েছিল। ২০২১ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসেও রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, জল ধরো জল ভরো-র মতো বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প নিয়ে ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব দেয়, সেবারও বাদ পড়ে বাংলার ট্যাবলো।
Be the first to comment