আগামী মাসেই বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে গোয়ায়। তার আগে বদলাচ্ছে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক সমীকরণ। যেখানে জোরকদমে চলে নির্বাচনী প্রস্তুতি সেখানে প্রায় প্রত্যেকদিনই দল বদল বা রং বদল করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এইরকমই এক খবর পাওয়া গিয়েছে গোয়ার সৈকত থেকে। নির্বাচনের মাত্র কিছু সপ্তাহ আগে ঘাসফুল ত্যাগ করলেন গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ইয়াতিস নায়েক।
গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা ইয়াতিস নায়েক দলের প্রতি একপ্রকার ক্ষুব্ধ হয়েই দলত্যাগ করেছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আজ পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন। তিনি পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, “গোয়ায় দল যেভাবে কাজ করছে সেই আবহে দলের সদস্য হিসেবে থাকার কোনও কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি না। আমি অপমানিত বোধ করছি। এই সবকিছুর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য আমি ক্লান্ত, হতাশ।”
তিনি লিখেছেন যে, শেষ মুহুর্তে অন্যান্য দল থেকে আসা নেতাদের নাম তালিকেয় উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, তৃণমূলের তরফে প্রকাশিত দুই প্রার্থী তালিকার কোনওটিতেই তাঁর নাম ছিল না। সেই ক্ষোভেই তিনি আজ পদত্যাগ করেছেন বলে একাংশ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। প্রাক্তন গোয়া মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা লুইজ়িনহো ফ্যালেইরোর সঙ্গে কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ৯ জন তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। সেই প্রথম নয়জনের মধ্যে নায়েকও ছিলেন একজন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একের পর এক নেতা তৃণমূল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই তাঁরা দল ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন, গোয়ার প্রাক্তন বিধায়ক লাভো মামলেদার, রাম মান্দ্রেকর, কিশোর পাওয়ার, কোমল পাওয়ার এবং সুজয় মালিক। তৃণমূল ছেড়ে দেওয়ার সময় সকলেই অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূল গোয়ায় ধর্মের ভিত্তিতে গোয়াবাসীদের বিভাজিত করছে। তাঁরা বলেছিলেন, “আমরা এই দলে থাকতে চাই না। তৃণমূল ধর্মের ভিত্তিতে গোয়াতে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। আমরা গোয়ার ধর্মনিরপেক্ষ মর্যাদা নষ্ট হতে দেব না। আমাদের উচিত গোয়ার এই বৈশিষ্ট্য রক্ষা করা।”
গোয়ায় নির্বাচনের প্রায় তিন মাস আগে থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর তৃণমূলের লক্ষ্য ২০২৪ এর সাধারণ নির্বাচন। সেই দিল্লি দখল করার লক্ষে তারা বিভিন্ন ছোটো ছোটো রাজ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। গোয়ায় নিজেদের সংগঠন দৃঢ় করার সময় একের পর এক নেতাদের অন্য দল থেকে ভাঙিয়ে এনেছে তৃণমূল। এর আগে নেতাদের তৃণমূলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। এখন ঠিক তার বিপরীত ছবিটা ফুটে উঠছে। অন্য দল থেকে ভেসে আসা মেঘদের আবার দল ছাড়তে দেখা যাচ্ছে। এর ফলে ভোট বাক্সে কী প্রভাব পড়বে তার হিসেব মিলবে ১০ মার্চ।
Be the first to comment