রাজ্য-রাজ্যপালের তরজা একেবারে সপ্তমে পৌঁছল। সোমবার এই বিতর্ক গিয়ে পড়ল সংসদে। বাংলার রাজ্যপালকে অপসারণের আবেদন করা হল সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন রাষ্ট্রপতির কাছে এই আবেদন করেন। সংবাদসংস্থা এএনআইকে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “রাষ্ট্রপতি মহাশয় ওনার বক্তব্য রাখার পর প্রথম সারিতে যাঁরা বসেছিলেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। তখনই সরাসরি ওনাকে বলি। আমি অনুরোধ করি, আপনি বাংলার রাজ্যপালকে সরিয়ে নিন। দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য এটা ক্ষতি হচ্ছে। উনি সবসময় সকলকে বিব্রত করেন। রাষ্ট্রপতি মহাশয় শুনেছেন। বেঙ্কাইয়া নাইডুজিও ওনার সঙ্গে ছিলেন।”
সোমবার থেকে সংসদে শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশন। অধিবেশনের শুরু হয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের অধিভাষণ দিয়ে। সেই অধিভাষণের পর সংসদে প্রথম সারিতে বসে থাকা সাংসদদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। করজোড়ে সৌজন্য দেখান তিনি। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে এসেও সৌজন্য বিনিময়ের সময় দেখা যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কিছু একটা বিষয়ে কথা বলছেন তৃণমূল সাংসদ। কী নিয়ে কথা, তা সেই সময় জানা না গেলেও সুদীপের শরীরী ভাষায় বোঝা যাচ্ছিল গুরুভার কোনও বিষয়েই কথা হচ্ছে। এরপরই সংসদের বাইরে বেরিয়ে সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই বিষয়টি জানান।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র কি পশ্চিমবঙ্গে আদৌ বেঁচে আছে? এখানে বিরোধীদের জায়গা কোথায়? কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধীদের ডাকা হয় না। বিরোধীদের নির্বাচনে প্রচার করতে দেওয়া হয় না। নির্বাচনে লড়তে দেওয়া হয় না। রাস্তায় নামলেই আমাদের আটকানো হয়। ভয় দেখিয়ে, মামলা দিয়ে, মারপিট করে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। তাই গণতন্ত্র কতটুকু বেঁচে আছে সেটাই তো সন্দেহের। যেটুকু আছে, গণতন্ত্র রক্ষায় সাংবিধানিক প্রতিনিধি মাননীয় রাজ্যপাল তিনি এই সরকারে অপকর্ম নিয়ে সরব হন। সেটা হজম করতে পারছেন না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, তাঁর সম্পর্কে খারাপ কথাবার্তা, তাঁকে কালো পতাকা দেখানো, রাস্তা আটকানো চলে। তবে এতকিছু করেও পারছে না বুঝে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে একবার শোনাতে। যাতে রাজ্যপালের মুখটা বন্ধ রাখা যায়। আমার মনে হয় যে পথে তৃণমূল হাঁটছে সেটা ঠিক নয়।
Be the first to comment