স্কুল খোলা নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে আলোচনা করতে নারাজ রাজ্য! চিঠি উচ্চশিক্ষা দফতরের

Spread the love

কোভিডকালে বন্ধ স্কুল। প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ পঠনপাঠন। তবে রাজ্য অনুষ্ঠানের কমতি নেই। এই পরিস্থিতিতে স্কুল খোলার ইস্যুতে রাজ্য শিক্ষা দফতরের সঙ্গে  আলোচনা করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী  দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, স্কুল খোলার ইস্যুতে এখনই কোনও আলোচনায় যেতে রাজি নয়, উচ্চশিক্ষা দফতর। চিঠি দিয়ে সেকথা স্পষ্ট করল বিকাশ ভবন।

গত ২৭ জানুয়ারি মুখ্য শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে শুভেন্দু অধিকারীর তরফ থেকে চিঠি দেন তাঁর ব্যক্তিগত সচিব চন্দ্রনাথ রথ। চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়, কেন রাজ্যে স্কুল খোলা হচ্ছে না ও স্কুল খুলতে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে সে প্রসঙ্গে শুভেন্দু- সহ রাজ্যের তিন বিধায়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে চান। সেই মোতাবেক যদি, ২৮ জানুয়ারি দুুপুর ৩ টে থেকে ৫ টার মধ্যে বেশ খানিকটা সময় ওই বৈঠকের জন্য পাওয়া যেতে পারে কি না সেই বিষয়েও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এই মর্মে উভয়পক্ষে একাধিক চিঠির আদানপ্রদান হয়। অবশেষে, সোমবার, রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের পাল্টা বিরোধী দলনেতাকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, আপাতত উল্লিখিত বিষয় নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। কারণ স্কুল খোলার গোটা বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। তাই এই বিষয়ে আপাতত কোনওরকম আলোচনাই করতে চায় না সরকার। যদিও, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বিরোধী দলনেতার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

কিছুদিন আগেই বিকাশ ভবন যাওয়ার পথে শুভেন্দুর কনভয় আটকেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিকাশ ভবন যাওয়ার পথে আটকানো হয় শুভেন্দুর কনভয়। বাধা দেওয়ার পরই পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয়ে যায় তাঁর। গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। স্কুল খোলার দাবি নিয়েই এ দিন তাঁরা বিকাশ ভবনে যাচ্ছিলেন। সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে সরাসরি প্রতি পদে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। গোটা ঘটনার বিবরণ  জানিয়েছেন রাজ্যপালকেও।

এদিকে, স্কুল খোলা নিয়ে হাইকোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। রাজ্য জানিয়েছে, তারা স্কুল খোলার পক্ষে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার স্কুল খুলতেই চায়। কিন্তু, অনেক বাচ্চারই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি। তাহলে কী করবে চলবে স্কুল? বাচ্চাদের নিরাপত্তারই বা কী হবে? শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন ধাপে ধাপে স্কুল খোলার পক্ষেই রাজ্য সরকার।  এদিকে স্কুল খোলার দাবিতে সরব বিরোধীরা। সোমবার রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদে নেমেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যে বিকাশ ভবনে পড়ুয়াদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তির ছবিও উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য সরকার পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি শুরু করছে। এই পাড়ায় শিক্ষালয় কথাটির নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত শিশুদের সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি, পড়া ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন নাচ, গান, আবৃত্তির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আপাতত রাজ্যের ৫০ হাজার ১৫৯ টি প্রাথমিক স্কুলে এবং  ১৫ হাজারের বেশি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে এই প্রকল্প চালু হচ্ছে। মোট ২ লাখেরও বেশি শিক্ষক থাকছেন এই ব্যবস্থায়। এর মাধ্যমে ৬০ লাখেরও বেশি পড়ুয়া উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*