কেন্দ্রীয় বাজেটের কী প্রভাব পড়তে পারে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে?

Spread the love

দিন দশেকের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শুরু। বাইশের এই পাঁচ রাজ্যের ভোটকে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসাবেও বর্ণনা করছেন কেউ কেউ। এ হেন গুরুত্বপূর্ণ ভোটের মাত্র ৯ দিন আগে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার সুযোগ পেয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। বাজেটে এমন কোনও বড় ঘোষণা তিনি করতে পারলেন না যাতে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে আমজনতার মন জেতা যায়। সেভাবে কোনও চমকই নেই নির্মলার বাজেটে। 

নির্মলার বাজেটের অধিকাংশ বরাদ্দই ডিজিটাল মাধ্যম এবং পরিকাঠামোগত খাতে। যার প্রভাব এখনই সরাসরি ভোটবাক্সে পড়াটা মুশকিল। যদিও, কৃষকদের মধ্যে যে ক্ষোভ কৃষি আইন এবং অন্যান্য সমস্যার জেরে দেখা গিয়েছে, সেটা খানিকটা প্রশমন করার চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী। আগামী অর্থবর্ষে ন্যূনতম সমর্থন মূল্যে কৃষকদের ফসল কেনার পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

নির্মলার ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী অর্থবর্ষে খারিপ মরশুমে ১ হাজার ২০৮ মেট্রিক টন ধান ও কম কিনবে সরকার। মোট ১৬৩ লক্ষ কৃষকের কাছ থেকে ২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি এমএসপি বাবদ পাবেন কৃষকরা। কৃষকদের যাতে দাম পেতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য ই-বিল সিস্টেম শুরু হবে। এর পাশাপাশি সেচ প্রকল্পের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা। সেটাও কৃষকদের সুবিধার্থে কাজে লাগবে। এর পাশাপাশি গঙ্গার উপত্যকা এলাকায় রাসায়নিক ব্যবহার না করে চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে। রেলমন্ত্রককে কৃষকদের পণ্য পরিবহণে বিশেষ সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সরকার কৃষকদের মনজয় করার যে চেষ্টা বাজেটে করেছে, সেটা হয়তো প্রত্যক্ষভাবে এই পাঁচ রাজ্যের ভোটে তেমন প্রভাব ফেলবে না। কারণ, কৃষি বিক্ষোভ নিয়ে বিতর্কের ক্ষত এখনও শুকোয়নি।

বাজেটের আর একটি ঘোষণা অবশ্য সামান্য হলেও প্রভাব ফেলতে পারে। সেটা হল কেন্দ্রের নতুন পর্বতমালা যোজনা। এই প্রকল্পে বলা হয়েছে দেশের পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য রোপওয়ে তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি এলাকাগুলিতে যোগাযোগ সাধনের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে এই রোপওয়ে। এবারে উত্তরাখণ্ডে বেশ কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপিকে। তাতে পাহাড়ি এলাকার জন্য ঘোষণা সামান্য স্বস্তি দিতে পারে গেরুয়া শিবিরকে। তবে, এর বাইরে বাজেটের আর কোনও ঘোষণা সরাসরি ভোটবাক্সে বিজেপিকে ডিভিডেন্ট দিতে পারে বলে মনে করছে না রাজনৈতিক মহল। উলটে করছাড় না দেওয়া বা সরাসরি নগদের জোগানের কোনও ঘোষণা না থাকায় বিজেপি ধাক্কা খেতে পারে বলেও মত অনেকের।  

বিরোধীদের ধারণা ছিল, বাজেটে জনমোহিনী সব প্রকল্প ঘোষণা করে ভোটমুখী রাজ্যগুলির আমজনতার মন জেতার চেষ্টা করতে পারে গেরুয়া শিবির। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে নির্মলার এবারের বাজেট একেবারেই জনমুখী নয়, ভোটমুখী তো নয়ই। বরং, অর্থমন্ত্রী আগাগোড়াই চেষ্টা করে গেলেন করোনার ড্যামেজ কন্ট্রোল করার। আয়ের উৎস ঠিক রেখে আর্থিক ধাক্কা সামলানোটাই মূল লক্ষ্য ছিল নির্মলার। ফলে অর্থমন্ত্রীর। এই বাজেটে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে বিজেপির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলার থেকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনাই বেশি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*