রাষ্ট্রপতির পর এবার প্রধানমন্ত্রী। বাংলার রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নালিশ জানালেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। মঙ্গলবার বাজেট পেশের আগে সংসদে উভয়ের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় হয়। দু’জন দু’জনের খোঁজখবর নেন। এরপরই অভিযোগের সুরে সৌগত রায় তাঁকে জানান, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে সরানো দরকার। তাঁর নানাবিধ কার্যকলাপের জেরে রাজ্য চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে। তা শুনে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সঙ্গে রসিকতা করেন। মোদির জবাব, ”আগে আপনি অবসর নিন, তারপর দেখব।” উভয়ের এই কথোপকথনের পর রাজনৈতিক মহলের মত, মোদির এই জবাব থেকেই স্পষ্ট, এখনই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের পদ থেকে ধনকড়কে সরানোর কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।
বাজেট পেশের দিন সংসদে শাসক-বিরোধী সকলেই সাধারণত হাজির থাকেন। মঙ্গলবার ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশের দিন সংসদ কক্ষে দেখা হয় প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মধ্যে। তাঁরা পরস্পর সৌজন্য বিনিময় করেন। এরপরই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে নিয়ে নালিশ করেন তিনি। বাজেটের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌগত রায় বলেন, ”ওঁর সঙ্গে আমার দেখা হল, একটু কথা বললাম। আমি সরাসরি বললাম, এই রাজ্যপালকে সরানোর ব্যবস্থা করুন। তা না হলে ওঁর কার্যকলাপে রাজ্য চালানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। উনি তখন একটু রসিকতা করেই বললেন, আপনি অবসর নিন, তারপর ভাবব। ভাবটা এমন যে আমি অবসর নিলে, হয়ত আমাকে ওই পদে বসানোর কথা ভাববেন।”
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে ওঠার পরপরই দিল্লির দরবারে ধনকড় প্রসঙ্গ তোলার পরিকল্পনা ছিল রাজ্যের শাসকদলের। আর দিল্লিতে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই সেই পদক্ষেপ করে তৃণমূল। অবিলম্বে বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন রাষ্ট্রপতি। সোমবার বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে এমন দাবিই জানিয়েছিলেন লোকসভার তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, যা এক কথায় নজিরবিহীন ঘটনা বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
সোমবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বক্তব্যের শেষে উপস্থিত সকল সাংসদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করছিলেন তিনি। সেই সময় সামনের সারিতে বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ। সূত্রের খবর, সেই সময় রাষ্ট্রপতির কাছে রাজ্যপালকে অপসারণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। বিষয়টি নিয়ে সংসদে ‘স্বতন্ত্র প্রস্তাব’ও আনতে পারে তৃণমূল।
Be the first to comment