গতকাল সংসদে বক্তব্য রেখেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বাজেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দাগেন তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে। তাঁর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরই একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতা টুইট বার্তায় রাহুলের সমালোচনা করেন। সমালোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে সংসদে বলা রাহুল গান্ধীর বিভিন্ন মন্তব্য। এইবার রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের সমালোচনা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে। রাহুলের মন্তব্যের বিরোধিতা করল আমেরিকা।
গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশ নীতি নিয়ে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। তিনি বলেছেন, “চিন-পাকিস্তানকে একসঙ্গে এনেছেন কেন্দ্রের মোদী সরকার।” এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে টুইট করে জবাব দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরপর মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে জানান হল যে তাঁরা ভারতের বিদেশনীতি রাহুলের এই মন্তব্যকে সমর্থন করেন না। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, রাহুলের এই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, “আমি এই বিষয়টি পাকিস্তান ও চিনের উপর ছেড়ে দেব। তারা তাদের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলুক। আমি নিশ্চিতভাবে এই মন্তব্য সমর্থন করি না।”
গতকাল কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেছেন, “মৌলিকভাবে ভারতের বিদেশ নীতির অন্যতম কৌশলগত নীতি ছিল যে চিন এবং পাকিস্তানকে আলাদা রাখতে হবে। কিন্তু এই নরেন্দ্র মোদীর সরকার চিন এবং পাকিস্তানকে একসঙ্গে নিয়ে এসেছে।” রাহুলের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি টুইটবার্তায় লিখেছেন, “লোকসভায় রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন যে, বর্তমান সরকার নাকি চিন ও পাকিস্তানকে কাছাকাছি এনেছে। সম্ভবত তাঁর ইতিহাসের পাঠ দরকার। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান বেআইনিভাবে শাকসগাম উপত্যকা চিনের হাতে তুলে দেয়। চিন ১৯৭০ সালে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে কারাকোরাম হাইওয়ে তৈরি করে। ৭০ এর দশক থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে উঠেছে। ২০১৩ সালে চিনা-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর শুরু হয়েছে। সুতরাং আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন, তখন কি চিন এবং পাকিস্তান দূরে ছিল?”
বিদেশমন্ত্রী কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে আরও বলেছেন, “লোকসভায় রাহুল গান্ধী বললেন যে আমরা প্রজাতন্ত্র দিবসে বিদেশি অতিথি আনতে পারছি না। যারা ভারকে থাকেন, তারা জানেন যে আমরা করোনার একটি ঢেউয়ের মাঝামাঝি রয়েছি। যে ৫ জন এশিয়ান প্রেসিডেন্টদের আসার কথা ছিল, তাদের সঙ্গে ২৭ জানুয়ারি ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। এটাও কি ওনার চোখ এড়িয়ে গিয়েছে?” উল্লেখ্য, বিদেশমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও গতকালের রাহুল গান্ধীর বক্তৃতা নিয়ে টুইট বার্তায় সমালোচনা করেছেন।
Be the first to comment