প্রাইভেটের নাম করে ‘করে খাওয়া’ হচ্ছে। বরদাস্ত করা হবে না। এবার রাজ্যের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক থেকে সরাসরি বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সীমান্ত সংলগ্ন সমস্ত ট্রাক টার্মিনাস নিয়ে নেবে পরিবহণ দফতর, নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ট্রাক টার্মিনাসে কেউ কেউ টাকা তুলছেন, এতে ব্যক্তির পকেট ভরলেও সরকারের কোষাগারের কোনও সুবিধা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘এ সব আর চলবে না।’’ প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পেট্রাপোল, হিলি, চ্যাংড়াবান্ধা, আলিপুরদুয়ার-ভুটান বর্ডারে, জয়গাঁও, মালদা, ঘোজাডাঙা- এগুলো ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে আমরা দিচ্ছি। ডিএম, এসপি-রা জেনে রাখুন। কেউ কেউ লোকালি পয়সা তুলে নিচ্ছেন। তার মধ্যে ডিফারেন্ট পলিটিক্যাল পার্টিও রয়েছে এবং কিছু অফিসারও রয়েছে। স্থানীয়। এটা হবে না। টাকাগুলো গর্ভমেন্ট ট্রেজারিতে আসবে। তাই এই জায়গাগুলোতে বর্ডারগুলোতে টোটালটাই ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে দেওয়া হচ্ছে। ও প্রাইভেট-টাইভেট হবে না। প্রাইভেটের নাম করে করে খাওয়া হচ্ছে। টাকা গর্ভমেন্টের রেভিনিউ হচ্ছে না।” এরপরই তিনি মুখ্যসচিবকে বলেন, রাজ্যের গোটা পরিকল্পনাটা জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের বুঝিয়ে বলতে।
মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী জানান, সাতটা জেলা নিয়ে একটি বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকরাও ছিলেন। মন্ত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে। পেট্রোপলের যে সমস্যা, সেটা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। বনগাঁ পৌরসভার দুটো ট্রাক টার্মিনাস রয়েছে। এছাড়াও তিন-চারটি বেসরকারি ট্রাক টার্মিনাস রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে রেভিনিউ সরকার কিছুই পাচ্ছে না। কিছুটা পৌরসভার খাতে যাচ্ছে। আর বেশিরভাগই ওখানে টাকা বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বনগাঁ পৌরসভা একটি এনওসি দিয়েছে। তাতে কিছুটা ভুল রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, মুখ্যসচিব যখন বনগাঁ পৌরসভার এনওসি-র ব্যাপারে কথা বলছিলেন. তখন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “যেভাবে এনওসি ওরা দিয়ে পাঠিয়েছে, এটা কোনও এনওসি-ই নয়। ল্যাঙ্গুয়েজ ইজ় ভেরি ব্যাড।” মুখ্যমন্ত্রী তখন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নির্দেশ দেন, “এনওসি-তে ভুল থাকলে ডায়রেক্ট একসঙ্গে করে দেবে। আর যদি কোনও মিউনিসিপ্যালিটি এনওসি না দেয়, কী লাইনে করবে, লাইনগুলো ঠিক করে দাও।”
তিন দিনের মধ্যে যাতে সব সমস্যা মিটিয়ে বিষয়টি ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে জানানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সীমান্ত সংলগ্ন সমস্ত ট্রাক টার্মিনাস নিয়ে নেবে পরিবহণ দফতর। ৮ তারিখে যে বিজ্ঞাপন বেরিয়ে যায়, তা দেখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সীমান্তাবর্তী এলাকা থেকে প্রচুর টাকা আসবে। সরকারের আয় হবে। চলবে কী করে? লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড-সব চলবে কী ভাবে? এই প্রকল্পগুলো চালাতে হবে না? তো আমরা নিজেরা এফেক্টিভ না হলে কী করে হবে?”
Be the first to comment