রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চলেছে শাসকদল। শুক্রবার এ কথা জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ”আমরা বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনব।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ”কার মেরুদন্ড সোজা সেটা তো মানুষ দেখছেন। নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশকে উস্কানি দিচ্ছেন রাজ্যপাল। পুলিশ-প্রশাসনকে রাজ্যপাল উস্কানি দিচ্ছেন।”
এদিকে, এদিন সকালেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ফের একবার টুইটে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি লেখেন, “পুলিশের শিরদাঁড়ায় আঘাত হেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী।” টুইট বার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের প্রশাসনিক বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে ‘ধমক’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার ওই মুহূর্তের ভিডিয়ো পোস্ট করে জগদীপ ধনখড়ের টুইট, “মারাত্মক চিন্তার বিষয়! সংবাদ মাধ্যমের সামনে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছেন, রাজ্যপালকে কি আপনাকে ফোন করেন?” তাঁর সংযোজন, “বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
এদিন নিজের টুইটে রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি IAS ও IPS Association-কেও ট্যাগ করেছেন ধনখড়। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, রাজ্যপাল কী বলছেন জানি না। প্রশাসনিক প্রধানের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশাসনের যে কোনও স্তরে পরামর্শ দিতে পারেন। এটা ওঁর কর্তব্য। রাজ্যপালের জ্ঞান আমাকে শুনতে হবে না।
এদিকে, রাজ্যসভাতেও উঠল রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত প্রসঙ্গ। তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিল আটকে রাখার অভিযোগ নিয়ে সরব হয় DMK। বিষয়টিকে সমর্থন জানায় তৃণমূল। ”পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালও অনেক বিল আটকে রেখেছেন।” এই অভিযোগে সরব হন তৃণমূল সাংসদরা। আলোচনার দাবি না মানায় DMK-এর সঙ্গে ওয়াক আউট করে তৃণমূলও।
এর আগেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ”আমার বিরুদ্ধে খারাপ অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমি কোনও খারাপ ভাষা প্রয়োগ করি না। রাজভবনে কোনও পাঁচতারা হোটেল থেকে খাবার আসে না।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে সরাসরি রাজ্যপাল বলেন, ”রাজভবনের বিরুদ্ধে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ আনছেন! ম্যাডাম চিফ মিনিস্টার, এটা কোনও ইগোর লড়াই নয়।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, ”ক্ষমতার বলে কোনও মন্তব্য করবেন না। রাজ্যের ৯ কোটি মানুষের জন্য কাজ করুন। দেখবেন রাজ্যপালকে আপনি সর্বদাই পাশে পাচ্ছেন। ক্ষমতার বলে কোনও মন্তব্য করবেন না। ৯ কোটি মানুষের জন্য কাজ করুন, রাজ্যপালকে আপনি পাশে পাবেন। কিন্তু, এখানে আইনের শাসন নেই। শাসকের আইন আছে।”
Be the first to comment