ঘটা করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই বিভ্রান্তি চরমে! কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল ‘লিস্ট’

Spread the love

১০৮ পুরসভার নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয় নিয়ম মেনেই। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা সাংবাদিক বৈঠক করে সেই তালিকা প্রকাশ করেন। দার্জিলিং ছাড়া প্রায় সব পুরসভার তালিকাই প্রকাশ করা হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনেই এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেই সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই তালিকা আপলোড করা হয় তৃণমূলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে। জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়ে লিস্ট। ২১৬ পাতার সেই তালিকায় ছিল প্রার্থীদের নাম।

কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে আচমকা দাবি করা হয়, ওই তালিকা আসল নয়। ওই তালিকায় কারও সইও নেই। ভুয়ো তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করে তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপর চলে ঘাসফুল নেতাদের দীর্ঘ বৈঠক। পরে নতুন তালিকা পাঠানো হয় জেলায়।

এ দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়  জানান, ১০৮ পুরসভার নির্বাচনে কোনও বিধায়ককে টিকিট দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতিকে গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। আর তারপর তালিকা প্রকাশ হতে দেখা যায়, সেখানে নাম রয়েছে তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাসের। আবার পার্থ-র দাবি ছিল একই পরিবারের দুজনকে টিকিট দেওয়া হয়নি। কিন্তু তালিকায় দেখা যায়, বীরভূমে স্বামী ও স্ত্রীর নাম রয়েছে তালিকায়। শুধু তাই নয়, জলপাইগুড়ি জেলায় পুরসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার ৩০ মিনিট পর জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ জানান, তালিকা প্রকাশ আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে। কোথাও কোথাও টিকিট না পেয়ে বিক্ষোভও দেখান তৃণমূল নেতারা। এসব ঘিরে যখন উত্তাপ চড়ছে, তখনই শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, ওই তালিকা চূড়ান্ত নয়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, সুব্রত বক্সি, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ফিরহাদ হাকিম সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব  খতিয়ে দেখেই প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও দীর্ঘ সময় ধরে এই তালিকা দেখেছেন। পাশাপাশি, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গেও তালিকা নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি। আর সব শেষে তালিকা পাঠানো হয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে। তিনিই চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন।

তারপরও কেন এই বিভ্রান্তি তৈরি হল, তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যেই মতের অমিল? নাকি আইপ্যাকের আপত্তি?  আর যদি সত্যিই ভুয়ো তালিকা প্রকাশ হয়ে থাকে, তাহলে শীর্ষ নেতৃত্বকে না জানিয়ে, কারা সেই কাজ করল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

তালিকা ঘিরে বিভ্রান্তি সামনে আসতেই তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা। শুক্রবার সন্ধেয় সুব্রত বক্সির কার্যালয়ে দীর্ঘক্ষণ চলে সেই বৈঠক। প্রাথমিকভাবে শোনা যায়, বিভ্রান্তি কাটাতে আবারও সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন পার্থ। তবে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। এই বিষয়ে মুখ খোলেননি তৃণমূলের মহাসচিব। এরপরই সব জেলায় সংশোধিত তালিকা পাঠানো হয়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*