রাজ্য নেতৃত্ব তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তারপরও বিভ্রান্তি দলের অন্দরে। বিক্ষোভ, প্রতিবাদের কাঁটায় বিদ্ধ ঘাসফুল শিবির। এরইমধ্যে শনিবার পুরভোটের তালিকা বিভ্রাট নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদ হাকিমের দাবি, অন্যায়ভাবে তালিকা দলের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার হয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, সবার মতামত নিয়েই চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আইপ্যাকের থেকেও তালিকা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।
এদিকে এদিনই আবার আইপ্যাক সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পুরভোটের কোনও প্রক্রিয়ায় যুক্ত নয়। তালিকাকেও তাদের কোনও হাত নেই। তা হলে ফিরহাদ হাকিম কেন বললেন আইপ্যাকের তালিকা নেওয়া হয়েছে? উঠছে সে প্রশ্নও। একইসঙ্গে একুশের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরজার যে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল, সেটাও ক্রমেই প্রকট হচ্ছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।
ফিরহাদ হাকিম এদিন বলেন, “টিকিটের চাহিদা খুবই বেশি। কিন্তু পার্থদা, বক্সীদারা অনেক কষ্ট করে সকলের সঙ্গে কথা বলে আইপ্যাকের লিস্টও নিয়ে একটা তালিকা বার করেছেন। তার আগে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেকেই লিস্ট তৈরি করেছেন। আমিও একটা তালিকা তৈরি করে দিয়েছি। কিন্তু সেটা ছড়িয়ে দেওয়াটা অন্যায়। আমার কাছে ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড রয়েছে বলে সেটা আমি হঠাৎ করে দিয়ে দিলাম এটা অন্যায়। এই পাসওয়ার্ডটাই কেউ অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। সুতরাং এটা অন্যায়। যে তালিকা সুব্রত বক্সী সই করে দিয়েছেন সেটাই চূড়ান্ত তালিকা।”
তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজ দেখার জন্য সম্প্রতি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অ্যাডহক কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন, সেই কমিটির সদস্য ফিরহাদ হাকিম। সুতরাং তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও বিষয়ে। সেই ফিরহাদই এদিন বলেন, আইপ্যাকের তালিকা নেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, তৃণমূলের ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কাদের হাতে এই পাসওয়ার্ড থাকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ভোট কুশলী সংস্থার পাশাপাশি দলের শীর্ষস্তরের বাছাই করা কয়েকজন নেতার কাছে এই পাসওয়ার্ড রয়েছে।
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা। ১০৭টি পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় এদিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলের ওয়েবসাইট-সহ তৃণমূলের বিভিন্ন সোশাল হ্যান্ডেলে এই তালিকায় আপলোড হয়। তালিকায় সামনে আসতেই প্রার্থীদের নিয়ে জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়। সূত্রের খবর, ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশের ঘটনায় কেউ কেউ আইপ্যাকের দিকেও ইঙ্গিত করে। তালিকা প্রকাশ নিয়ে শুক্রবার রাতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় বলেও সূত্রের খবর। যদিও পাল্টা আইপ্যাক সূত্রে দাবি করা হয়, এই তালিকার সঙ্গে তারা কোনওভাবেই জড়িত নয়। এমনকী ওয়েবসাইটে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, সেই ‘এ লিস্ট বি লিস্ট’-এর সঙ্গে সম্পর্ক নেই পিকের সংস্থার।
Be the first to comment