কলকাতায় দ্বিতীয় বিমানবন্দর তৈরি নিয়ে অনেকদিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। মাঝে ভাঙড়ের দিকে জমি দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের মারফত খবরও পাওয়া গিয়েছিল। আর এরই মধ্যে রবিবার রাতে রাজ্যের বিরুদ্ধে কার্যত আক্রমণ শানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর অভিযোগ ছিল, তিনি নাকি বিগত ছয় মাস ধরে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার তার কোনও জবাব দিচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে এবার কেন্দ্রকে পাল্টা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন মমতা। বলেন, “জমি দিচ্ছে না! তাঁরা কেন জমি দিচ্ছে না! কলকাতা বিমানবন্দরের আরও ১ হাজার একর জমি লাগবে। আমি কি সব বাড়িগুলোকে সরিয়ে দেব! এটা কি কখনও সম্ভব? তৃতীয় রানওয়ে তো করে দিয়েছি। এরপর ১ হাজার একর যে জমি নতুন করে বিমান বন্দরের জন্য দরকার সেটা তো খুঁজতে হবে। এত সহজ নয় বিষয়টা। আমি এখানে আবার সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম করতে দেব না।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এভাবে জোর করে মানুষের থেকে জমি নিয়ে… কোচবিহারে আমি করে দিয়েছি কতদিন আগে। এখনও পর্যন্ত রিজিওনাল কানেক্টিভিটি শুরু করেনি। মালদা তৈরি, বালুরঘাট তৈরি। সেগুলো কেন হয়নি? রিজিওনাল কানেক্টিভিটির কাজ একটাও করেনি। অন্ডালের বিমানবন্দরের ব্যবস্থা আমি তৈরি করে দিয়েছি। নতুন কলকাতা বিমানবন্দরের জন্য আমি সবাইকে এভাবে উচ্ছেদ করতে পারি না। যখন জমি পাওয়া যাবে, তখন এই কাজ আমরা করতে পারব। আমিও চাই জমি পাওয়া যাক। কিন্তু আপনারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলুন না, এক হাজার একর ফাঁকা জমি আমাকে দেওয়ার জন্য। আমরা কাউকে জোর করে সরাতে পারব না। এটা আমাদের নীতি নয়।
উল্লেখ্য, কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রধান বিমানবন্দর। কিন্তু বর্তমানে যে পরিমাণে যাত্রী এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন, তাতে কলকাতা বিমানবন্দরের যাত্রী পরিষেবা ক্ষমতা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে বলেই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। যদিও বিষয়টি এতটাও গুরুতর বলে মনে করছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এত তাড়াহুড়োর কিছু নেই। এখনও সময় আছে। এখনও ১০-১৫ বছর সময় আছে। ১০ বছর পর জমি নেওয়ার দরকার পড়বে। আমরা বাগডোগরার জন্য জমি দিয়ে দিয়েছি। যেখানে যেখানে জমি দেওয়া সম্ভব, সেখানে সেখানে জমি আমরা দিয়ে দিয়েছি। অন্ডালের জন্যও আমরা জমি দিয়েছি। কিন্তু সেটা কেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করা হল না। অন্ডাল শুধু বাংলারই নয়, এটা ঝাড়খণ্ড ও বিহারেরও সীমানায় অবস্থিত। সেখানকার মানুষও অন্ডাল বিমানবন্দরের সুবিধা পাবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলুন রাজনীতি না করতে।”
Be the first to comment