শুধু রাজ্য পুলিশ নয়, আগামী ১২ তারিখ রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে? কলকাতা হাকোর্টে বুধবার এই মামলার চূড়ান্ত শুনানির পর রায়দান স্থগিত রাখল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য পুলিশ দিয়ে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ‘আত্মবিশ্বাস’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতিরা। বারবার উঠে এল ২০১৫ সালে বিধাননগর পুরভোটে নজিরবিহীন অশান্তির কথা। পাশাপাশি, এদিন কেন্দ্রের কাছেও বিচারপতিরা জানতে চান, প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে হলে তা কতদিন আগে থেকে জানাতে হবে? সবপক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে এদিন রায় ঘোষণা করেনি হাই কোর্ট।
২০১৫ সালের পুরভোটে অশান্তি, হিংসায় সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বিধাননগর। রাজনৈতিক সংঘর্ষের পাশাপাশি খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হন। এবারও মহিষবাথান-সহ একাধিক এলাকায় মনোনয়ন পেশ পর্ব থেকেই উত্তপ্ত। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে এবারের বিধাননগরের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আরজি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি (BJP) নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে আজ তার চূড়ান্ত শুনানি ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কী ভাবছে নির্বাচন কমিশন, তার রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল। রিপোর্ট পেশ করে কমিশন জানায়, তারা রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোটে করাতে আত্মবিশ্বাসী। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিচার করে মনে হয়েছে। একথা শোনার পর বিচারপতিরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, কলকাতা পুরভোটও রাজ্য পুলিশের নেতৃত্বে হয়েছিল। তবে পুরোপুরি অশান্তি এড়ানো যায়নি। তবে আত্মবিশ্বাসের কথা আসছে কেন?
এর উত্তরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী আগের একাধিক ভোটের কথা উল্লেখ করেন। যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করানো সম্ভব হয়েছে। এরপর বিচারপতিরা কেন্দ্রের কাছে জানতে চান যে প্রয়োজন হলে কতদিনের মধ্যে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো সম্ভব। তাতে সলিসিটর জেনারেল জানান, ন্যূনতম ২৪ঘণ্টা আগে জানালেই বাহিনী পাঠানো যাবে। এসব শুনে আজকের মতো রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতিরা। ফলে রাজ্য পুলিশ নাকি কেন্দ্রীয় বাহিনী – চার পুরসভা ভোটের নিরাপত্তায় কারা থাকবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
এদিন পুরভোট নিয়ে আদালত অবমাননার মামলাটি খারিজ করেছে হাই কোর্ট। করোনার বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে হাই কোর্ট রাজ্যে চার পুরনিগমের ভোট চার থেকে ছয় সপ্তাহ পিছনোর কথা বললেও তা তিন সপ্তাহ পিছলো, তা নিয়ে কমিশনের ব্যাখ্যা চেয়ে মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার প্রাসঙ্গিকতা নেই – এই যুক্তিতে মামলাটি খারিজ করেন বিচারপতিরা। বলা হয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিজের মতো যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। তাই আদালত অবমাননার প্রশ্ন নেই।
Be the first to comment