আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোট ৷ তার আগে গ্রামীণ উন্নয়নে আরও জোর দিতে চায় রাজ্য সরকার ৷ তাই গ্রামীণ উন্নয়নে ৯ টি দফতরের জন্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার ৷ নবান্ন সূত্রে খবর, গ্রামীণ উন্নয়ন যাতে কেন্দ্রীয় টাকার অভাবে থমকে না যায়, তাই এই দফতরগুলিকেই টাকা দেওয়া হয়েছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে তিনি বাংলার গ্রামীণ এলাকার পরিকাঠামো পুনর্গঠন এবং উন্নয়নমূলক কাজের গতি অব্যাহত রাখতে সরকারের সমস্ত দফতরগুলিকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়ের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরই সরকারের তরফে এই অর্থ বরাদ্দ করা হলো ৷
প্রশাসনের একটি অংশের বক্তব্য, গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিভিন্ন খাতে অর্থ সঠিক সময় দেওয়া হচ্ছে না ৷ সেই কারণে অনেক জায়গায় সমস্যা হচ্ছে ৷ তাই ওই কাজ যাতে অর্থের অভাবে থেমে না যায়, সেই কারণে এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ৷
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে যে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা ও আর্থিক মানোন্নয়নে জড়িত একাধিক দফতরের প্রকল্পগুলিতে বাড়তি নজর দিতে প্রায় ৪৮৬ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এই সম্পূর্ণ অর্থ দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের কোষাগার থেকে। রাজ্যে ‘রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট ফান্ড’-এর অধীনে যে প্রকল্পগুলির কাজ চলছে, সেগুলি যাতে ভালোভাবে চলে, তাই এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
মোট ৯টি দফতরকে এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে সব থেকে বেশি টাকা পাচ্ছে পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দফতর। তার পরিমাণ প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। দফতর সূত্রে খবর, গ্রামীণ উন্নয়নে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় পঞ্চায়েত দফতর। একগুচ্ছ প্রকল্প রয়েছে ‘আরআইডিএফ’-এর।
তালিকায় এরপরই রয়েছে পূর্ত দফতর। গ্রামীণ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির জন্য তারা পাচ্ছে ১৫৫ কোটি টাকা। রাজ্যের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুত্ পৌঁছে দিতে বিদ্যুত্ দফতরকে দেওয়া হচ্ছে ৪০ কোটি টাকা। জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নের জন্য দেওয়া হচ্ছে ৩৫ কোটি টাকা।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাষি বা ছোট ছোট শিল্প, কারখানার জন্য সমবায় ব্যাঙ্কের উপর বিরাট অংশের মানুষ নির্ভরশীল। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে সমবায় দফতরকে দেওয়া হচ্ছে ২৫ কোটি টাকা। সেচ পাচ্ছে ২২ কোটি, কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে ১৫ কোটি, খাদ্য দফতরকে দেওয়া হচ্ছে ১৩ কোটি এবং প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর পাচ্ছে ৬ কোটি টাকা।
Be the first to comment