নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে সারলেন গৌতম আদানির ছেলে তথা আদানি পোর্টের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার করন আদানি। বৃহস্পতিবার তিনি নবান্নে এসেছেন। তাজপুরে রাজ্য সরকার যে বন্দর তৈরি করবে, তাতে বিনিয়োগে আদানিরা আগ্রহী বলে সূত্রের খবর।
সম্ভবত সেই সংক্রান্ত আলোচনা করতেই এবার মমতার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন আদানি গ্রুপের কর্ণধার। বৈঠকে রয়েছেন রাজ্যে মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। তাজপুরে তৈরি হবে গভীর সমুদ্র বন্দর। আর সেই নির্মাণের জন্য দরপত্র চেয়ে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম আগেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যেই যেখানে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি হবে সেই জায়গা পরিদর্শন করে গিয়েছেন আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কর্মকর্তারা। গত বছরের শেষে নবান্নে মমতার সঙ্গে দেখা করেছিলেন খোদ গৌতম আদানি। তারপরই এই বিনিয়োগ নিয়ে জল্পনা বাড়ে।
জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার দরপত্র চাওয়ার পর এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখায় ১০ টি সংস্থা। সেগুলির মধ্যে থেকে চারটি সংস্থাকে বেছে নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে আদানি ছাড়াও বিদেশি সংস্থাও রয়েছে। চারটি সংস্থাই তাজপুর এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখে দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আর তার আগেই আদানিদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মমতা। অনুমান করা হচ্ছে, আদানিরাই ওই বন্দর তৈরির দায়িত্ব পেতে পারেন। তবে নবান্নের তরফ এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
তাজপুরে তৈরি হবে গভীর সমুদ্র বন্দর। আর সেই প্রকল্পের প্রক্রিয়া রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। এই প্রকল্পে প্রত্যক্ষ ভাবে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেই দাবি সরকারের। এক হাজার একর জমির ওপর তৈরি হবে এই সমুদ্র বন্দর। প্রথম পর্যায়ে ছ’টি বার্থ ও পরের পর্যায়ে আরও ন’টি বার্থ তৈরি হবে এই বন্দরে।
সরকারি সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ত্রিপুরা, অসম, মিজোরাম-সহ একাধিক রাজ্যে বাণিজ্যের মূল প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে এই তাজপুর বন্দর। পলি পড়ে যাওয়ার কারণে হলদিয়া বন্দরে বড় জাহাজ ঢুকতে পারছে না। তাই মাঝ সমুদ্রে গিয়ে ‘শিপ টু শিপ’ লোডিং করতে হচ্ছে, তার ফলে খরচও বাড়ছে। কিন্তু গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে তাজপুরে সরাসরি বড় জাহাজ ঢুকে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর নমান্নে এসেছিলেন গৌতম আদানি। বন্দরে লগ্নি করার ক্ষেত্রে তখনই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই সময়, রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ কতটা সুগম, সে তথ্য আদানির সামনে তুলে ধরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে টুইটে আদানি জানিয়েছিলেন, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত থাকার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। কোথায় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের সুযোগ কেমন, সেই বিষয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
Be the first to comment