চলতি মাসের ২০ তারিখে পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। সীমান্তবর্তী রাজ্যের নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই চড়ছে জাতীয় রাজনীতির পারদ। দেশের হাতেগোনা যে কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আছে পঞ্জাব তারমধ্যে অন্যতম। তবে পঞ্জাব কংগ্রেস নেতাদের বেনজির সংঘাত দেখেছিল দেশ। প্রদেশ সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধুর সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। ইস্তফা দিয়ে তিনি দল ছেড়েছিলেন এবং পঞ্জাব লোক কংগ্রেস নামে নতুন দল তৈরি করে বিজেপির সঙ্গে জোটে গিয়ে ভোটে লড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন ক্যাপ্টেন।
এই প্রথমবার ক্যাপ্টেন ইস্যুতে মুখ খুললেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এদিন অমরিন্দর সিংয়ের নাম না করে তিনি বলেন অমরিন্দর সিংকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হয়েছিল কারণ ‘কংগ্রেস সরকারকে’ কেন্দ্র থেকে ‘বিজেপি’ নিয়ন্ত্রণ করছিল। প্রিয়াঙ্কা বলেন, “আমরা আপনাদেরই প্রতিনিধ চরণজিৎ সিং চন্নিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম। তিনি আপনাদের সমস্যাগুলি জানেন এবং অনুভব করতে পারেন। আমাদের মনে হয়েছিল কিছু একটা ভুল হচ্ছে, তাই আমরা নেতৃত্বে বদল এনেছিলাম।”
এই প্রথম বারের জন্য কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের তরফে প্রকাশ্যেই সিধুর পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। অমরিন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে সিধুর বিদ্রোহকে সমর্থন জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেই অমরিন্দরকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কংগ্রেস ত্যাগ করেন। নিজের পদত্যাগপত্র গান্ধীদের প্রতি বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন অমরিন্দর। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর। পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা ‘পাকিস্তানের পক্ষে’ থাকা একজনের পৃষ্ঠপোশকতা করেছেন। সোনিয়া গান্ধীকেও ‘অন্ধ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ক্যাপ্টেন।
ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের পদত্যাগের পর পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব কমেনি। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি ও সভাপতি সিধুর মধ্যে মতের অমিল একাধিকবার প্রকাশ্যে চলে আসে। চন্নি পরিচালিত সরকারকেও বারবার আক্রমণ করে গিয়েছেন সিধু। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরও কংগ্রেস হাইকমান্ড পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মুখের কথা ঘোষণা করেননি। শেষমেশ রাহুল গান্ধীর হস্তক্ষেপে চরণজিৎ চন্নিকেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আগামী দিনে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামলে পঞ্জাবের ক্ষমতা কংগ্রেস ধরে রাখতে পারে কিনা তাঁর উত্তর মিলবে আগামী ১০ মার্চ।
Be the first to comment