অনন্ত মহারাজের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত সোমবারই উত্তরবঙ্গ সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাণেশ্বরের সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় চিলা রায়ের ৫১২তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। প্রথমেই চিলা রায়কে সম্মান জানান মুখ্যমন্ত্রী। দেখেন অনুষ্ঠানও।
https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/videos/3394636347326668/
এরপর মঞ্চে উঠে বীর যোদ্ধা চিলা রায়ের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কোচ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বীর চিলা রায়কে সম্মান জানাতে ১৫ ফুট উঁচু মূর্তি উন্মোচন করা হবে। বাবুরহাট চেকপোস্টে ওই মূর্তি বসবে। জায়গাটিকে দর্শনীয় স্থানের মতো করে সাজিয়ে তোলা হবে। বহু মানুষ সেখানে আসবেন বলেও আশা তাঁর। ভাবনাচিন্তা বাস্তবায়নে রাজ্য সরকার ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। এছাড়া শিবচণ্ডী মন্দির রাস্তাটির নামকরণও চিলা রায়ের নামে করা হবে।
এছাড়াও তিনি জানান, অনন্ত মহারাজের সম্মতি থাকলে নারায়ণী সেনাকে রাজ্য পুলিশের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিশেষ শূন্যপদ তৈরি করে তাঁদের চাকরি দেওয়া হবে। তার ফলে নারায়ণী সেনারা রাজ্যের মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, “সন্ধ্যা দি আমার খুব পছন্দের মানুষ। খুব প্রিয় মানুষ। ওঁকে ভারতরত্ন বললে ভুল হবে না। হয়ত জীবনে কিছুই পায়নি। কিন্তু, মানুষের যে ভালোবাসা তা কখনও একটা পদ্মশ্রী বা একটা হতশ্রীতে শেষ হয় না। পদ্মশ্রী একটা পুরস্কার। হতশ্রী তার বিপরীত অর্থে ব্যবহার করি আমরা। দু’টো কখনওই এক নয়। পদ্মশ্রী বরাবরই সম্মানের। কিন্তু, তার উপরেও দু’ তিনটি পুরস্কার রয়েছে। সেই অ্যাওয়ার্ডগুলি তাঁর অনেকদিন আগে প্রাপ্য ছিল। আজকে সেসব তাঁর পাওয়ার কথা নয়।”
আক্ষেপের সুরে তাঁর সংযোজন, “জীবনের শেষ বয়সে এসে তিনি একটা ধাক্কা খেয়েছেন। তিনি অসম্মানিত বোধ করেছেন। আমরা তাঁর জন্য ব্যথিত, শোকাহত, মর্মাহত। আমি কলকাতা যাব, তারপর সন্ধ্যা দির মরদেহ নিয়ে বেরব। রাজ্য সরকার গান স্যালুট দিয়ে সসম্মানে তাঁর ক্রিয়াকর্ম করবে।”
এদিন বাপ্পি লাহিড়ী প্রয়াণেও মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “বাপ্পি দাও মারা গিয়েছেন। তাঁর অনেক হিন্দি গান আপনারা জানেন। অনেক বাংলা গানও রয়েছে। বলিউড থেকে টলিউড সবজায়গায় কাজ করেছেন তিনি। সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল সন্ধ্যা দি এবং বাপ্পি লাহিড়ী চলে যাওয়ায়। বাপ্পি লাহিড়ী মুম্বইয়ে মারা গিয়েছেন। হয়ত ওখানেই তাঁর শেষ কাজ হবে। সন্ধ্যা দি আমাদের আপনজন। আমি গিয়ে ওঁর কাজকর্ম করতে পারব। এখন বাগডোগরা থেকে দ্রুত কলকাতা যেতে হবে।”
উল্লেখ্য, গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর কারণে এদিনের অনুষ্ঠান কাটছাঁট করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সংগীত শিল্পীর দেহ শায়িত থাকবে রবীন্দ্রসদনে। শেষযাত্রায় মিছিল করা হবে। গান স্যালুটের মাধ্যমে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানানো হবে। গীতশ্রীর শেষকৃত্যে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment