প্রয়াত বাংলার প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসক অজয়কৃষ্ণ সরকারের তত্ত্বাবধানে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। একই সঙ্গে তাঁর দেখভাল করছিলেন বিভিন্ন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, পালমোনোলজিস্ট এবং অন্য চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকরা ক্রমাগত তাঁর শরীরের দিকে নজর রেখেছিলেন। শারীরিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় সুরজিতকে ভেন্টিলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সাতের দশকের ময়দানের অন্যতম সেরা ফুটবলারের প্রয়াণে শোকার্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ময়দানের স্টার ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তকে আমরা হারালাম। তাঁর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাঁকে সুভদ্র মানুষ হিসেবে জানতাম। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সুরজিৎ সেনগুপ্তের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার
তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
নবান্ন
৩২৫, শরৎ চ্যাটার্জি রোড
হাওড়া- ৭১১১০২
স্মারক সংখ্যা:
৫০/আইসিএ/ এনবি
তারিখ: ১৭/২/২০২২
*মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা*
নক্ষত্র ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্তের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
দেশের অন্যতম সেরা উইঙ্গার সুরজিৎ সেনগুপ্ত দুই প্রধান ক্লাব ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানে খেলেছেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে এশিয়ান গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অতুলনীয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে ‘বাংলার গৌরব’ সম্মানে ভূষিত করে।
তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়া জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাঁকে সুভদ্র মানুষ হিসেবে জানতাম।
আমি সুরজিৎ সেনগুপ্তের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি ।
*মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়*
সুরজিতের জন্য ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে তিন প্রধানের কর্তারা ছাড়াও IFA সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় ছিলেন। সেখানেই সুরজিতের জন্য মেডিক্যাল টিম গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া গত সপ্তাহে সুরজিতকে দেখতে গিয়েছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী।
এছাড়া এই প্রাক্তন ফুটবলারের নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ১৯৭৪ সালে কিংবদন্তী শৈলেন মান্নার হাত ধরে মোহনবাগানে আসেন সুরজিৎ। সেবার ১ বছর মোহনবাগানের হয়ে যথেষ্ট সুনাম এর সঙ্গে ময়দানে খেলতে দেখা যায় তাকে প্রথম বছরে সুরজিত সেনগুপ্তর সতীর্থ হিসেবে মোহনবাগানের ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য, নিমাই গোস্বামী, বিজয় দিকপতির মত দিকপাল ফুটবলাররা ছিলেন। পরের বছরেই চলে যান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। সেবার IFA শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগানকে ৫-০ পরাজিত করে ইস্টবেঙ্গল। প্রথম গোলটি এসেছিল সুরজিতের পা থেকে।
সেবছর শিল্ড এবং কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্টবেঙ্গল। সিংহভাগ অবদান ছিল সুরজিত সেনগুপ্তর। ১৯৭৯ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল ছিলেন সুরজিৎ। ১৯৭৮ সালে তার নেতৃত্বে দিল্লির মাঠে মোহনবাগানকে ৩-০ পরাজিত করে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ইস্টবেঙ্গল। ১৯৮০ সালে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে এক ঝাঁক ফুটবলার লাল হলুদ ছেড়ে চলে আসেন মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবে।
Be the first to comment