রহস্যজনকভাবে মৃত্যু বাম নেতার। এবারও হাওড়া। সোমবার রাতে হাওড়ার আবাদা স্টেশনের কাছে রেল লাইনের ধার থেকে উদ্ধার হল সৌমেন কুণ্ডু নামে এক বাম নেতার রক্তাক্ত দেহ। হাওড়ার আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে উত্তাল গোটা রাজ্য। কারা ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, তা এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। আর সেই আনিসের মৃত্যুর তিনদিনের মধ্যেই হাওড়ায় আরও এক বামপন্থী নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা। শুধু তাই নয়, এই সৌমেন কুণ্ডুর নেতৃত্বেই তাঁর এলাকায় আনিস- কাণ্ডে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবিতে মিছিল করা হয়েছিল। তারপরই তাঁর এই মৃত্যু অস্বাভাবিক বলেই মনে করছে পরিবার।
মৃত বাম নেতার নাম সৌমেন কুণ্ডু (৪২)। তিনি হাওড়ার ৫৮ নম্বর বাসস্ট্যান্ড বলে পরিচিত এলাকায় সিপিএমের ছোট ভট্টাচার্য পাড়া শাখা সম্পাদক ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে তাঁর শেষবার কথা হয়। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর গভীর রাতে আবাদা স্টেশনের কাছে রেল লাইনের ধার থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। রাতেই রেল পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে ফোন করে তাঁর দেহ উদ্ধারের খবর জানানো হয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোন সৌমেন কুণ্ডু। সাইকেলে চেপে বেরতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, দুপুরে তিনি খেতে আসবেনা। তবে অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় পরিবারের তরফে চ্যাটার্জিহাট থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানানো হয়। পুলিশের তরফ থেকে তাঁরা কোনও সহযোগিতা না পাওয়ায় হাওড়া সিটি পুলিশ কমিশনারের অফিসে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকজন। তাঁরা অনুরোধ করেন, ফোনটা ট্র্যাক করা হোক, কারণ তখনও ফোনে রিং শোনা যাচ্ছিল। পুলিশ ফোন ট্র্যাক করতে রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে লালবাজারেও তাঁরা যোগাযোগ করেন।
অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফেরার খবর পেয়ে সার্কুলার রোডে সৌমেনের বাড়িতে পৌঁছে যান এলাকার সিপিএম নেতা কর্মীরা। দলের সাউথ ইস্ট এরিয়া কমিটির সদস্য সন্দীপ কোলে বলেন, সৌমেনের কোনও শত্রু ছিল না। তিনি দলের শাখা সম্পাদক ছিলেন। আনিস মৃত্যুর ঘটনার পর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেও মানতে চাইছে না পরিবার। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক, এটাই চাইছেন তাঁরা।
এ দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে মৃতের দাদার দাবি, তাঁর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলেই মনে হয়। কারণ মৃতের মাথার পিছন দিকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ও নাক দিয়ে রক্ত ক্ষরণের ছবি ধরা পড়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।
Be the first to comment