দীর্ঘ তিন দশক পর বহরমপুর পুরসভা কংগ্রেসের হাতছাড়া হল। বহরমপুরের ২৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে এবার ২১টি পেয়েছে তৃণমূল। মাত্র ৬টি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদ জেলার আরও বেশ কয়েকটি পুরসভাতেও একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে তৃণমূল।
বহরমপুরের এই ফলাফল মানতে নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বুধবার তাঁর অভিযোগ, পুলিস দিয়ে বহরমপুর দখল করেছে তৃণমূল। কংগ্রেস প্রার্থীদের অনেককে মনোনয়নপত্র পেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে, ভোটারদের লাগাতার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ফল ভোটাররাও মেনে নিতে পারছেন না। অধীরের আরও অভিযোগ, এদিন গণনা কেন্দ্র থেকেও কংগ্রেস কর্মীদের অনেককে মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেস নেতার চ্যালেঞ্জ, ‘এই মুহূর্তে যদি মক ভোট হয়, তাহলে কংগ্রেস ২৮টির মধ্যে ২৮টিতেই জিতবে। একটি ওয়ার্ডও যদি কংগ্রেস হেরে যায়, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
অধীরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন ‘কংগ্রেস নেতা মিথ্যে কথা বলছেন। আজ সমস্ত গণনা কেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছিল। সেই বলয় ভেদ করে সাধারণ মানুষের গণনা কেন্দ্রে ঢোকা সম্ভব ছিল না।’ ফিরহাদ আরও বলেন, ‘আসলে বহরমপুরের মানুষ কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
বহরমপুর-সহ গোটা মুর্শিদাবাদেই এক সময় অধীরের বিরাট প্রভাব ছিল। তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারীকে মুর্শিদাবাদের সাংগঠনিক দায়িত্বে রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর কারসাজিতেই মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু পুরসভা এবং জেলা পরিষদে ভাঙন ধরে। বহরমপুর পুরসভাও তার বাইরে ছিল না। সেই সময় অধীর চৌধুরী শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কংগ্রেস ভাঙার অভিযোগে সরব হয়েছিল।
গত দু-তিন বছর ধরে মুর্শিদাবাদ জেলায় অধীরের প্রভাব কমতে শুরু করেছে। আরেক কংগ্রেস বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূলে ভিড়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এমন বেশ কয়েকজন দলবদলু বিধায়ককে টিকিট দিয়ে জিতিয়ে আনে। পুরভোটের আগে বহরমপুরে বেশ কয়েকবার তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিনও খোদ বহরমপুর শহরে অধীরের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল।
Be the first to comment