রাশিয়ান হানায় ইউক্রেনে ইতিমধ্যেই ভারতীয় ছাত্র নবীণ শেখরারাপ্পার মৃত্যু হয়েছে। তারপর সেদেশে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের মধ্য উদ্বেগ ক্রমশই বাড়ছিল। এই অবস্থায় আরও এক ভারতীয় ছাত্রের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর আগেই পাওয়া গিয়েছিল। আহত ছাত্র হরজোৎ সিং ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে থেকে পালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে হরজোৎ জানিয়েছেন, একাধিকবার তার আঘাত লেগেছে এবং তারা পা মারত্মকভাবে জখম হয়েছে। কিয়েভ সিটি হাসপাতাল থেকে তিনি এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, “আমার কাঁধে গুলি লেগেছিল। এবং সেখান থেকে গুলি ঢুকে বুকে চলে যায়। চিকিৎসকরা আমার বুক থেকে গুলি বের করেছেন। আমার পা ভেঙে গিয়েছে। আমি ক্রমাগত আধিকারিকদের সাহায্য চেয়েছিলাম, আমি চাইছিলাম আমাকে যেন লভিভে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গে যোগযোগ করেনি। শুধুমাত্র এই সংবাদমাধ্যম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এখন আমার কথা সার বিশ্ব জানতে পারবে।”
হরজোৎ সিংয়ের যখন গুলি লাগে তখন তিনি নিজের বন্ধুদের সঙ্গে ট্যাক্সিতে ছিলেন এবং ইউক্রেন সীমান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন। কোনওক্রমে রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে তিনি লভিভে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন। “আমি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছিলাম লভিভে পৌঁছাতে তাঁরা আমাকে সাহায্য করতে পারবেন কিনা? কারণ আমি হাঁটতে পারছিলাম না। কিন্তু আমাকে একের পর এক মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।” বলেন গুলবিদ্ধ ভারতীয় ছাত্র। হরজোৎ সিং দিল্লির ছত্তরপুরের বাসিন্দা। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার মত অনেক ছাত্র এখনও কিয়েভে আটকে রয়েছেন।’
নিঃসন্দেহে হরজোতের অভিজ্ঞতা সেদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের পরিবারের উদ্বেগ আরও বেশি বাড়িয়ে তুলবে। হরজোৎ জানিয়েছেন, “অনেকেই বাড়িতে নিজেদের আবদ্ধ করে রেখেছেন। তাঁরা জানেন না আসলে কী হচ্ছে। আমি ক্রমাগত দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি, কিন্তু প্রত্যাশিত সাহায্য পাইনি। দূতাবাসের উচিৎ ছাত্রদের সাহায্য করা। আমি একটা বার্তা দিতে চাই, যা হয়েছে তাতে আমাদের কোনও হাত নেই। আমরা শুধুমাত্র ভাল কিছুর আশা করতে পারি। এখন সকলে আসল চিত্রটা জানতে পারবেন… আমার পরিবারের কান্না থামছে না। আমার মা কেঁদেই চলেছেন। মায়েরা তো এইরকমই হয়ে থাকেন।” বলেই ওই ভারতীয় ছাত্র। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে এখনও অবধি ১৭ হাজার ভারতীয় বিগত কয়েকদিন ইউক্রেন সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। এখনও অবধি ৬ হাজার জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং এখনও ১ হাজার ৭০০ জন ইউক্রেন ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
Be the first to comment