পরিবর্তন আসতে চলেছে রাজ্যের সরকার ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের পোশাকে ৷ স্কুলের পোশাকেও এবার থাকবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় রং নীল-সাদা। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার থেকে সমস্ত সরকারি স্কুল এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য এই নীল-সাদা রঙের পোশাক বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। রাজ্যের তরফেই এই পোশাক পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ৷ রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে এই পোশাক তৈরি করানো হচ্ছে। নবান্নের তরফে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে শিক্ষা দফতরকে। রাজ্যের সব জেলার বিডিওদের কাছেও এই নির্দেশ পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর ৷ বিডিওরাই জেলার বিভিন্ন সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের কাছে পোশাকের বরাত দিচ্ছেন।
এই বরাত পাওয়ার পর স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির তরফে স্কুলে স্কুলে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পোশাকের মাপ নেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এতদিন সরকারের টাকায় কাপড় কিনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে নিজেদের ইউনিফর্ম তৈরি করত স্কুলগুলি এবং সেই পোশাকই দিত পড়ুয়াদের। অনেক ক্ষেত্রেই বাজারে সেই কাপড় আসত ভিন রাজ্য থেকে। কিন্তু রাজ্যের বস্ত্র শিল্পের উন্নয়নের দিকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ঠিক হয়েছে, রাজ্যের ক্ষুদ্র এবং ছোট শিল্প সংস্থাগুলির থেকে কাপড় কিনবে রাজ্যেরই অধীনস্ত সংস্থা তন্তুজ। সেই কাপড় তন্তুজর মাধ্যমে স্বনির্ভর সংস্থাগুলির কাছে পৌঁছবে ৷ তারপরই পড়ুয়াদের পোশাকের মাপ নিয়ে স্কুল ড্রেস তৈরি করবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ৷
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেরা একটি হাফশার্ট, একটি ফুলশার্ট, একটি হাফপ্যান্ট ও একটি ফুলপ্যান্ট পাবে। প্রয়োজনে টাইও দেওয়া হবে তাদের ৷ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা দু’টি শার্ট ও একটি স্কার্ট আর একটি টিউনিক পাবে। যদি স্কুল চায় তাহলে টাইও দেওয়া হবে। অন্যদিকে, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা একটি হাফ এবং একটি ফুলশার্টের পাশাপাশি দু’টি করে ফুলপ্যান্ট পাবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টমের ছাত্রীরা পাবে দু’জোড়া সালোয়ার কামিজ এবং ওড়না। ছেলেদের প্যান্টের পকেটের জন্য হালকা কাপড়ের হিসেব আলাদা করে দিতে হবে প্রস্তুতকারকদের। লোগো-সহ ব্যাজ আসবে শিক্ষা দফতর থেকেই।
তবে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এই তথ্য স্কুলগুলির কাছে আসায় সন্তুষ্ট নন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে একই ধরনের স্কুল পোশাকের বিপক্ষে তাঁরা। এতে পড়ুয়াদের আলাদা করে চিহ্নিত করা কঠিন হবে। অন্য স্কুলের পড়ুয়া যদি তাঁদের স্কুলে চলে আসে, তাহলে হঠাৎ করে বোঝা যাবে না। স্কুলের পছন্দ অনুযায়ী ইউনিফর্ম দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
Be the first to comment