আইএমএ-এর সভাপতি পদের লড়াইয়ে জিতলেন নির্মল মাজি

Spread the love

আইএমএ নির্বাচনে জয়ী নির্মল মাজি। বারো ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলল গণনা। পাঁচটি ভোট বাতিল হয়েছে। ৩৬৬ ভোটের মধ্যে ৩৬১ ভোটে গণনা হয়। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে গণনা শুরু হয়। সাড়ে চোদ্দো রাউন্ড গণনা হয়। প্রত্যেকটা রাউন্ডে ২৫ টা করে ভোট ছিল। একটি ভোটে ৩৫ জন প্রার্থীর প্যানেলের কাউন্টিং চলছিল। শেষমেশ নির্মল মাজি আইএমএম কলকাতার সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। তিনি তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশান্ত ভট্টাচার্যের থেকে ৭ ভোটের বেশি জয়ী হয়েছেন।

নির্মল মাজির শিবিরের যে প্যানেল, তাতে চিকিৎসক মানব নন্দী ৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন। বিপক্ষের প্রার্থী অভিজিৎ চৌধুরী সেক্রেটারি পদে মানব নন্দীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। ট্রেজার পদে নির্মল মাজির বিরুদ্ধ গোষ্ঠী অনির্বাণ দোলুই ৩০ ভোটে জিতেছেন।

উল্লেখ্য, চিকিৎসক সংগঠনের ভোটও একেবারে রাজনৈতিক নির্বাচনী লড়াইয়ের মতোই হয়েছে। শনিবার থেকে দেখা গিয়েছে, এই ভোট ঘিরে দুই চিকিৎসক সংগঠনের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। একটি রাজনৈতিক নির্বাচনী লড়াইয়ে যে যে উপাদানগুলি কাজ করে, সেই ফ্যাক্টরগুলি কাজ করেছে এক্ষেত্রেও। চিকিৎসক সংগঠনের নির্বাচনেও উঠেছে ভুয়ো ভোটের অভিযোগ। উঠে এসেছে বহিরাগত তত্ত্বও। উঠেছে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগও।

প্রশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, “এটা আমাদের নৈতিক জয়। প্রতিবারই নির্মল মাজি ৫-৭ ভোটেই জিতে যান। অনেক ভুয়ো ভোট পড়েছে। এতে আমরা পিছিয়ে পড়ছি বলে মনে হয় না।”

সর্বোপরি নির্বাচনের দিন ঘটেছে চড় মারার ঘটনাও। পরিস্থিতি এতটাই বাড়াবাড়ি হয়েছে, যে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ কর্মীও। পুলিশ কর্মীর গায়েও পড়েছে হাত। যদিও তা ভুলবশত বলেই দাবি করছেন চিকিৎসকরা। অভিযোগ, প্রশান্ত ভট্টাচার্য ও অনির্বাণ দোলুইয়ের ঘনিষ্ঠ পার্থপ্রতিম মণ্ডলকে চড় মারেন নির্মল মাজি ঘনিষ্ঠ অলকানন্দা সরকার। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন। চড় মারার অভিযোগ ক্যামেরার সামনে স্বীকারও করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, প্রশান্ত ভট্টাচার্য ও অনির্বাণ দোলুই দু’জনই শান্তনু সেনের ঘনিষ্ঠ।

আইএমএ- নির্বাচনে এরকমই অনভিপ্রেত বেশ কিছু ছবি দেখা গিয়েছে চিকিৎসক সংগঠনের নির্বাচনে। তবে নির্মল মাজির বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে, তিনি কোনও ভোটই করতে দেন না। এই যে সাত ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি, তাতে বিরোধীদের দাবি নৈতিক জয় তাঁদেরই। তাঁদের অভিযোগ, আসলে ছাপ্পা ভোটেই জয়ী হয়েছেন নির্মল মাজি, আর তাতেই ব্যবধান অল্প।

তবে নির্মল মাজির অনুগামীরা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, “এই জয় আসলে সততা, স্বচ্ছ্বতা, সত্যের জয়। নির্মল মাজি ডাক্তারদের জন্য করেছেন, মানুষের জন্য করেছেন। আর ডাক্তাররাই প্রমাণ করে দিলেন, নির্মল মাজি কতটা করেন।” এক্ষেত্রে আবার বহিরাগত তত্ত্ব তুলছেন তাঁরা। নির্মল মাজির অনুগামীদের বক্তব্য, “ডক্টর নির্মল মাজির বিরুদ্ধে যাঁরা লড়েছিলেন, তাঁদের ৯০ ভাগ ডাক্তারই নন। বাইরে থেকে লোক এনে অ্যাপ্রন পরিয়ে ডাক্তার বানানো হয়েছিল। তাঁরাই সমস্যা তৈরি করেছিলেন।”

নির্মল মাজি বলেন, “আমার বাবারও আইএমএ-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমি ছাত্র বয়স থেকে আইএমএ-র এর সঙ্গে যুক্ত। আমি পরপর তিন বার ছ’বারের জন্য নির্বাচিত হয়েছি।২ হাজারের বেশি ডাক্তার আইএমএ-এর সদস্য।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*