রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কেন্দ্র করে শাসকদলের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ল বিজেপি। বিধানসভায় মহিলা তৃণমূল বিধায়কেরা রাজ্যপালকে হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, অন্তত পাঁচ বার রাজ্যপাল বেরিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, শাসকদলের মহিলা বিধায়কেরা তাঁকে বেরোতে দেননি। জগদীপ ধনখড়কে ধাক্কা মারা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘রাজ্যপালের কী মনে হয়েছে জানি না। কিন্তু ওনাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
যদিও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় নিজে হেনস্থার অভিযোগ করেননি। সরাসরি শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যদের নাম করে ‘গুন্ডা বিধায়ক’ বলেও উল্লেখ করেন শুভেন্দু। রাজ্যপালকে নিগ্রহের নিন্দায় বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত পদযাত্রাও করেন বিজেপির বিধায়কেরা।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতার এই অভিযোগ খণ্ডন করেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে চন্দ্রিমা বলেন, ‘রাজ্যপালের মতো লম্বা-চওড়া একজন মানুষকে আমরা নিগ্রহ করব? ঢং করতে করতে উনিও কি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন?’
রাজ্যে ৩৫৬ লাগু নিয়ে বিজেপি বিধায়কেরা এ দিন ফের দাবি তুললে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা। পালটা প্রশ্ন তোলেন, ‘বিরোধীরা কি সংবিধান ভাল করে পড়েছেন? এ নিয়ে আদালতের রায়গুলো পড়ে দেখেছেন? সংবিধান জানা নেই বলেই বারবার ৩৫৬-র কথা বলেন।’
রাজ্যপালের ভূমিকারও সমালোচনা করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মমতা মন্ত্রিসভার এই সদস্যের কথায়, ‘ভাষণ পড়ার জন্য রাজ্যপালকে করজোড়ে অনুরোধ করছেন মুখ্যমন্ত্রী, এমন কখনও দেখেছেন? বাজেট অধিবেশনের আগে ভাষণ পড়া রাজ্যপালের সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। উনি সেই দায়িত্ব পালন করতে চাননি।’
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। রাজ্যপালের ভাষণের আগেই বিজেপির বিধায়কেরা ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভে দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হন ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে সাংবিধানিক নিয়মরক্ষায় বাজেট ভাষণের প্রথম ও শেষলাইন পড়ে তিনি রাজভবনে ফিরে যান। এই ঘটনার জেরেই শাসকদল ও বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এই বিশৃঙ্খলা পরিকল্পিত বলে দাবি করেন। গোটা ঘটনা নজিরবিহীন বলেও দাবি করেন। যদিও শুভেন্দুর দাবি, রাজ্যপালের ভাষণের প্রতিলিপি দেখেই তাঁর বিক্ষোভ দেখানোর প্রয়োজন বলে মনে করেছেন।
Be the first to comment