প্রশান্ত কিশোর ও তৃণমূল কংগ্রেসের ফাটলের জল্পনা এখন অতীত। বঙ্গ রাজনীতির ময়দানের নিন্দুকদের মুখে ছাই দিয়ে নজরুল মঞ্চে সাংগাঠনিক বৈঠকের মঞ্চে জোড়াফুলের শীর্ষ ব্যক্তিত্বের পাশে প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতি মঙ্গলবার নজর কাড়লো। যদিও বরাবরই জল্পনায় জল ঢেলে প্রশান্ত কিশোর দাবি করে এসেছেন, বিচ্ছেদের জল্পনা সমস্তই ভুয়ো খবর। পুরভোটের আগে বঙ্গ রাজনৈতিক ময়দান উত্তাল ছিল পিকে-তৃণমূল বিচ্ছেদের জল্পনায়। এক ব্যক্তি, এক পদ সহ পুরভোটের একাধিক প্রার্থী তালিকা জল ঢেলেছিল সে জল্পনায়।
পুরভোটের আগে একাধিক বিষয়েই দলের ভিতরেই তৈরি হয়েছিল মতান্তর। যাতে জড়িয়ে যায় পিকের সংস্থা I-PAC-এর নামও। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ ক্যাম্পেন নিয়ে দলের তরফে বিবৃতি দিয়ে ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ সম্পর্কিত যে ক্যাম্পেন সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে তা তৃণমূল কংগ্রেস অনুমোদিত নয়। এরপরই যেসব নেতা-নেত্রীরা এই পোস্ট করেছেন তাদের অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, তাঁকে না জানিয়েই I-PAC এই পোস্ট করেছে। এই অভিযোগের উত্তরে পালটা প্রশান্ত কিশোরের I-PAC জানায়, ”তৃণমূল কংগ্রেস ও তার নেতাদের ডিজিটাল মাধ্যম হ্যান্ডেল করে না আইপ্যাক। না জেনে কেউ এই ব্যাপারে দাবি করেছেন বা মিথ্যা কথা বলেছেন।”
এরপরই বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে ঝড় তোলে পুরসভা ভোটের জন্য তৃণমূলের একাধিক প্রার্থী তালিকা। দলনেত্রী ও শীর্ষ কমিটির বিবেচনায় খারিজ হয়ে যায় তৃণমূলের সরকারি ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট I-PAC-এর টুইট করা প্রার্থী তালিকা। এরপরই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ ভবিষ্যৎবাণী করেন তৃণমূল-পিকে বিচ্ছেদ সময়ের অপেক্ষা। সেসময় বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছিল আইপ্যাক-জোড়াফুলের সোনার সংসারে নিরুদ্দেশ শান্তি আর সদ্ভাব।
এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এক সাক্ষাৎকারে I-PAC কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর দাবি করেন, ”সবই মিডিয়ার তৈরি জল্পনা। ফাটল কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সঙ্গে আমার সম্পর্কে কোনও চিড়ও ধরেনি।” এখানেই শেষ নয়, সাক্ষাৎকারে আইপ্যাক (I-PAC) কর্ণধারের দাবি, ”দিদির সঙ্গে আমার সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন আসেনি। বরং খবরগুলি পড়েছি আর হেসেছি। রিপোর্টারদের তো কিছু একটা করতে হবে। তাই মিথ্যে মিথ্যে শিরোনাম তৈরি করে সবই খবর বিক্রির ছক।”
উল্লেখ্য, মতভেদের জল্পনা পিছনে ফেলে সম্প্রতি অতি সক্রিয় I-PAC -ও। বহুদিন পর সাংগাঠনিক বৈঠকের মঞ্চে দেখা গেল প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)-কে পাশেই ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ দলের শীর্ষ নেতারা। হ্যাপি ফ্যামিলি পিকচার দেখে বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, একুশের সাফল্যকে পাথেয় করে মতানৈক্য ভুলে অব্যাহত রাজনীতির পিচে পিকে-তৃণমূল জুটির ব্যাটিং।
Be the first to comment