পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে দলের শোচনীয় পরাজয় মেনে নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ৷ এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করার কথা জানালেন তিনি ৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে টুইটে রাহুল লেখেন, নম্রতার সঙ্গে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি ৷ যাঁরা জিতেছেন তাঁদের অভিনন্দন৷ তবে কংগ্রেস কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের জন্য তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ৷ এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করে যাব।
কিন্তু দলের অন্দরে আবারও যে যে প্রশ্নগুলি উঠে আসছে তা হল, আর কতবার হারের মুখ দেখার পর নেতাদের শিক্ষা নেওয়া শেষ হবে? কংগ্রেস কি আদৌ নির্বাচনী বিপর্যয় থেকে কোনও শিক্ষা নিচ্ছে? পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে এমন বিশ্রি হারের দায় কি গান্ধী পরিবার এড়াতে পারে? উত্তরপ্রদেশে হারের দায় কার? পঞ্জাবে খারাপ ফলের দায়িত্ব কে নেবে? রাহুলকে বাদ দিয়ে উত্তরপ্রদেশে পায়ের তলার হারানো জমি উদ্ধারের দায়িত্ব সোনিয়া গান্ধী তুলে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কার উপর ৷ উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখ ছিলেন প্রিয়াঙ্কা৷ নতুন দায়িত্ব পেয়ে প্রিয়াঙ্কা চেষ্টার কসুর করেননি ৷ ‘ম্যায় লড়কি হু, লড় সকতি হু’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রচারে ঝাঁপিয়েছিলেন ৷ কিন্তু উত্তরপ্রদেশ তাঁকেই প্রত্যাখ্যান করল ৷
পঞ্জাব বাদে বাকি চার রাজ্যে কংগ্রেস যে বিশাল কিছু আহামরি ফল করতে চলেছে এমনটা আশা কেউই করেনি কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল শতাব্দী প্রাচীন দলকে খাদের কিনারা থেকে একেবারে অতলে ঠেলে দেবে এমনটাও কল্পনা করা যায়নি ৷ পঞ্জাব তো হাতছাড়া হলোই ৷ বাকি চার রাজ্যেও শোচনীয় হার হয়েছে কংগ্রেসের ৷ উত্তরাখণ্ডে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয় ৷ এবার তাই সেখানে কংগ্রেসের জয়ের আশা ছিল কিন্তু পাহাড়ি রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে আরেকবার সুযোগ করে দিল ৷ গোয়া ও মণিপুরে একই অবস্থা ৷ ওই দুই রাজ্যে বিজেপি গতবারের চেয়ে ভালো ফল করেছে ৷
উত্তরপ্রদেশেও রেকর্ড ভেঙে এই প্রথম ৩৬ বছর পর কোনও রাজনৈতিক দল পরপর দু’বার ক্ষমতায় আসীন হতে চলেছে ৷ দেশের সবথেকে বড় রাজ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্তি মাত্র ২ টো আসন৷ স্বাধীনতার পর শতাব্দী প্রাচীন দলের এমন অবস্থা এই প্রথম ৷ আর পঞ্জাব? আপের সামনে সব বিরোধী দলই মুখ থুবড়ে পড়েছে ৷ কংগ্রেসের সব হেভিওয়েট প্রার্থীরা হেরেছেন ৷ দলের ভোটের হার অর্ধেক কমেছে ৷ মুখরক্ষায় দলের তরফে বলা হচ্ছে, আমরা চেষ্টা করেছিলাম লড়াই করার কিন্তু হার-জিত নির্ভর করে মানুষের রায়ের উপর ৷ কেন এমন হার হল তার পর্যালোচনা প্রয়োজন৷ দলের এমন দায়সাড়া মন্তব্যে সন্তুষ্ট নয় বিক্ষুব্ধরা বরং তাঁরা মনে করছেন, আগে কংগ্রেসকে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়তে হবে ৷ প্রধান বিরোধী দলের জায়গাটা পাকাপোক্ত করে তুলতে হবে ৷ তবেই জাতীয় স্তরে বিজেপির সঙ্গে টক্কর দেওয়া সম্ভব ৷
Be the first to comment