নন্দীগ্রাম দিবস ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুরের মালাপাড়ায় তুমুল উত্তেজনা। ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির শহিদ বেদিতে মালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ধস্তাধস্তি। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। সোমবার সকালে মালাপাড়ায় গিয়ে শ্রদ্ধা জানান কুণাল ঘোষ, দোলা সেনরা। ওই একই বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তবে মেলেনি প্রশাসনিক অনুমতি। এদিকে তৃণমূল নেতৃত্বর শ্রদ্ধার জানানোর পরই মালা সরিয়ে শুদ্ধিকরণ বিজেপি কর্মীদের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল বাধে।
সোমবার নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে ঢালাও কর্মসূচী রয়েছে তৃণমূলের। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, গোকুলনগরের মালপল্লীর শহিদ বেদিতে মাল্যদান, গৌরাঙ্গমূর্তিতে হরি কীর্তন ও ভাঙাবেড়ায় শহিদ তর্পনের কর্মসূচি। পাশাপাশি সোনাচূড়ার শহিদ বেদিতেও মাল্যদানের আয়োজন করা হয়। মালাপাড়ার পাশাপাশি এই শহিদ বেদিতেও মাল্যদানের অনুমতি দেওয়া হয়নি বিরোধী দলনেতাকে। পরে অর্থাৎ দুপুর নাগাদ তাঁকে অনুমতি দেয় প্রশাসন।
আগে থেকে কর্মসূচি নির্ধারিত করা থাকলেও জেলা পুলিশের তরফে সাফ জানানো হয় যে তৃণমূল-বিজেপি দুইপক্ষকে একসঙ্গে কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না। এদিকে, মালাপাড়ায় কর্মসূচি সেরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ততক্ষণে পৌঁছায় গোকুলনগর অধিকারী পাড়ায়। সেই সময় মঞ্চ থেকে শেখ সুফিয়ান (নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা) সরাসরি নন্দীগ্রাম থানার আইসি সমর রায় চৌধুরিকে অনুরোধ করে বলেন, এই পবিত্র মাটি যেন বিরোধী দলনেতা স্পর্শ যেন না করেন।
একই রকম ভাবে কুণাল ঘোষও আহ্বান করেন। এখানেই ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, তাহলে কি পুলিশ-প্রশাসন চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের অঙ্গুলি হিলনে? কারণ সকালে মালাপাড়া ও সোনাচূড়ার শহিদ বেদিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মালা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় এদিন দুপুরে মাল্যদান করেন তিনি। এরপর গোকুলনগরে দফায়-দফায় সমস্যা তৈরি হয়।
সোমবার দুপুর নাগাদ এলাকায় পৌঁছান শুভেন্দু অধিকারী। যদিও, মাল্যদানের অনুমতি না মেলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। তবে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, এর আগেও পুলিশ তাদের একাধিক কর্মসূচি পালন করার অনুমতি দেয়নি। তাই তাদের কিছু এসে যায়না। নিজেদের মতো করেই কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি।
নন্দীগ্রাম আন্দোলন কর্মসূচি বরাবরই ভূমি উচ্ছেদ কমিটি করে থাকে। পরে অর্থাৎ ২০০৮ সাল থেকে তৃণমূল এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। গতবছর এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান শুভেন্দু। তারপর থেকেই নন্দীগ্রামের একাধিক কর্মসূচি নিয়ে তু-তু, ম্যায়-ম্যায় চলে আসছে সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরের মধ্যে।এখানে যে সকল আন্দোলন হয় তা একদিকে যেমন তৃণমূল পালন করে একইভাবে পালন করেন বিরোধী দলনেতা।
Be the first to comment