সাম্প্রতিক পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ব্যাপক পরাজয় হয়েছে। দেশের যে তিনটি রাজ্যে কংগ্রেস সরাসরি ক্ষমতায় ছিল, তারমধ্যে অন্যতম ছিল পঞ্জাব। ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, পঞ্জাবও কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে, ক্ষমতা এসেছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদম পার্টি। পঞ্জাব শুধুমাত্র কংগ্রেসের হাতছাড়াই হয়নি, সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা একদম তলানিতে পৌঁছে গিয়েছে। কংগ্রেসের পরাজয়ের পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষুব্ধ প্রবীণ কংগ্রেস নেতাদের একাংশ যাঁরা রাজনৈতিক মহলে জি-২৩ নামে পরিচিত, তারা দলের নানা ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের নীতি নির্ধারণ নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছিলেন ওই গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, শশী থারুর, আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ কংগ্রসে নেতারা। সম্প্রতি কংগ্রেসের অস্থায়ী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে রফাসূত্র বের করার চেষ্টা করছিলেন। তাদের সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীর বৈঠকও হয়েছে। সেই বৈঠকে দলকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন ওই বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা।
সোনিয়াকে কী বললেন তারা, একনজরে দেখে নেওয়া যাক…
জি-২৩ নেতারা কংগ্রেস সভানেত্রীকে জানিয়েছেন, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে তারা মনে করেন, লোকসভার বিরোধী নেতা হিসেবে এবার রাহুলের দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ। সংসদে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে রাহুল সরাসরি দল ও গোটা বিরোধী পক্ষকে নেতৃত্ব দিন, বলেই মনে করছেন তারা।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরে দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হওয়া অবধি সোনিয়া গান্ধীই দলকে নেতৃত্বে দিলে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে সেপ্টেম্বরে সভাপতি নির্বাচনের সময়ে গান্ধী পরিবারের কোনও সদস্য যেন সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন। কারণ গান্ধী পরিবারে কেউ সভাপতি নির্বাচনে অংশ নিলে অন্য কোনও প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা প্রায় থাকবেই না।
জি-২৩ নেতাদের পক্ষে থেকে সোনিয়া গান্ধীকে জানানো হয়েছে, দলের কোনও সাংগঠিক বা নীতি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তারা জানতে পারেন না, সেই বিষয়ে আগে থেকে তাদের জানালে তারাও নিজেদের মতামত দিতে পারবেন।
জি-২৩ নেতাদের সঙ্গে গান্ধী পরিবার, বিশেষত রাহুল গান্ধীর যে দূরত্ব বেড়েছিল, সেই আবহে প্রবীণ নেতাদের তরফে এই ধরনের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। এখন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী তথা রাহুল গান্ধী এই প্রবীণ নেতাদের এই প্রস্তাবের সঙ্গে কতটা সহমত হন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
Be the first to comment