বগটুইয়ে বৃহস্পতিবার যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রামপুরহাট হত্যাকান্ডের নেপথ্যে রয়েছে বিরোধীদেরই চক্রান্ত, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। নেতাজি ইন্ডোরে দাঁড়িয়ে বুধবার প্রথমবার বগটুই হত্যাকান্ডে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। কোন তত্ত্ব খাঁড়া করলেন তিনি?
এদিন মমতা বলেন, আমি ওসিকে সরিয়ে দিয়েছি। এসডিপিও-কে সরিয়ে দিয়েছি। আমি বলেছি, আইবি-ডিআবি যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরকেও সরিয়ে দিতে। আমরা সিট গঠন করেছি। ডিজি নিজে কাল থেকে ওখানে পড়ে রয়েছেন। আমি ফিরহাদকে পাঠিয়েছি। ফিরহাদ হাকিম, অনুব্রত মণ্ডল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়-সবাই গিয়েছিলেন।
আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) আমি নিজেও যাব বগটুই। আমি আজই যেতাম। কিন্তু কিছু দল ল্যাংচা খেতে খেতে ঢুকছেন ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে। তাই রাত্রি হয়ে যাবে। ওরা থাকাকালীন আমি যাব না। কারণ পায়ে পা লাগিয়ে আমরা ঝগড়া করতে চাই না। আমি রেডি ছিলাম আজকে যাওয়ার জন্য। শুনলাম ল্যাংচা মহলে ঢুকে ল্যাংচা খেয়ে এখন আসানসোলের দিকে যাচ্ছেন। আসানসোল করে রামপুরহাট যাবেন। তাঁরা গেছেন তাঁদের ব্যাপার, কখন ফিরবেন তাঁদের ব্যাপার। তাই আজকের দিনটা ছেড়ে দিলাম। এটা বাংলা, উত্তরপ্রদেশ নয়। আমিও টিম পাঠিয়েছিলাম হাথরসে, আমার টিমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মমতা আরও বলেন, কই উন্নাও নিয়ে তো কিছু হয় না? হাথরস নিয়ে, লখিমপুর নিয়ে কিছু হয় না? দিল্লিতে দাঙ্গা হল কিছু হয় না? এখানে তোমরাই ঘটনা ঘটাবে, আর তারপর কোর্ট কাছারি করবে, দর্শনধারী চেহারা নিয়ে টিভিতে বসে পড়বেন! এটা ঘটনা ঘটেছে, তীব্র নিন্দা করি। ১০ কোটি লোক আছে এখানে, কোনও একটা গ্রামে কোনও একটা বাড়িতে কেউ আগুন ধরিয়ে দেয়, খুন হয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার বিরুদ্ধে অ্যাকশন হবে, এখানে কালার দেখি না।
এখানে বসে আছেন একজন লাট সাহেব। আর বলে ফিরছেন বাংলা সবেচেয়ে খারাপ। আর ঘুরে বেড়াচ্ছেন দার্জিলিঙ থেকে জলপাইগুড়ি। প্রতিদিন সরকারকে গালাগালি দিচ্ছেন। একটা পুলিশ যদি একটু দোষ করে ফেলে, অ্যাকশন হচ্ছে। সবাই খারাপ? এক-দুজন ভুল তো সব জায়গায় করতে পারেন। আমরা বলতে পারি, পাঁচটা আঙুল সমান?
মনে রাখবেন সব জায়গাতেই একটা দুটো এদিক-ওদিক থাকে, সবাই নয়। যদি কেউ অন্যায় করে আমরা তাকে প্রয়োজনীয় শাস্তি দিই। আমরা দেব, এটা কর্তব্য। আসলে কী জানেন তো দাঙ্গা করতে পারছে না। লোকে খেতে পারছে না, এ কথা বলতে পারছে না। মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না, একথা বলতে পারছে না। বাচ্চারা মিড ডে মিল পাচ্ছে না, এ কথাও বলতে পারছে না। তাই ধরে নিয়েছেন….খুব সহজ একটা দেশলাই জ্বালিয়ে দেওয়া তাই না…এই দেশলাইটা জ্বালাতে… আমি জানি যারা চক্রান্ত করে, তাদের কোনও জুরি নেই। কিন্তু তারা বোঝে না, অন্যের ঘরে দেশলাই লাগালে, সেটা নিজের ঘরে এসেও পড়তে পারে।
অনেক নষ্টামি, অনেক দুষ্টামি, অনেক কুৎসা, অপপ্রচার চলেছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। মানুষ কোথা থেকে নিরাপদ থাকবে? গ্যাসের দাম, পেট্রোলের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষ যাতে কিছু বলতে না পারে, তাই হঠ করে কিছু একটা ঘটিয়ে দিচ্ছে। আর প্রেসকে বলছে, চেল্লাও, চেল্লাও। রাজ্যপালকে বলে দিচ্ছে, এটা বলো। প্রেসকে বলে দিচ্ছে, এটা বলো।
আমাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে এমন অনেক অফিসার বলেছেন, গর্ভনর হাউজ থেকে বলা হয় এখানে রেড করো, ওখানে ওর বাড়িতে গিয়ে রেড করো। সব কিছু জানি আমরা। মুখ বুঝে সহ্য করে শুধু বাংলার জন্য। মনে রাখবেন বিজেপির নেতা-বাম-সিপিএম বাংলাকে দুর্নাম করে, লাভ হবে না। বাংলাকে ভেঙে দেওয়া সহজ নয়।
Be the first to comment