‘কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে?’ কলকাতা হাইকোর্টে লিখিতভাবে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এবার এই মামলায় দেশের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কার্যত নজিরবিহীন মন্তব্য করেছেন তিনি। এর আগে শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে এ ভাবে ডিভিশন বেঞ্চের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ ছাড়া এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহার সম্পত্তির হিসেবও চেয়েছিলেন তিনি। বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানি। আর শুনানি চলাকালীন এই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।
গত মাস দুয়েকের মধ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর দেওয়া চারটি সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। মামলাগুলির নথি এবং সেই সব মামলায় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চের দেওয়া স্থগিতাদেশের নির্দেশ দেশের প্রধান বিচারপতি ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির বক্তব্য, ‘দেশ দেখুক, বিচার করুক বেআইনি চাকরি দেওয়া নিয়ে কী চলছে।
সম্প্রতি এক আইনজীবীর একটি মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। এসএসসি-র নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় ভার্চুয়াল শুনানিতে এক আইনজীবীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘কথা হয়ে গেছে, স্টে হয়ে যাবে’। এই বক্তব্যের রেকর্ডিং বের করার আর্জি জানান আইনজীবীরা। কিন্তু ভার্চুয়াল শুনানির কোনও রেকর্ড থাকে না। তাই তা বের করা যায়নি। একইসঙ্গে লিখিত নির্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁর কাছে মঙ্গলবার এক আইনজীবী এসে এই সব মামলা নিয়ে এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের হয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। বিচারপতি উল্লেখ করেন, ‘তাঁর কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে বলেছি, আমাকে মাফ করবেন।’
এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহার সম্পত্তির হিসেব নিয়ে তাঁর দেওয়া নির্দেশের পর ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, সিল বন্ধ খামে দিতে হবে হিসেব। খোলা যাবে না খাম। সেই মামলার শুনানিতেই এ দিন প্রকাশ্যে আসে বিচারপতির অসন্তোষ।
Be the first to comment