তপন কান্দু হত্যা মামলায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন আদালতের। কেন ঘটনার একদিন পরে পুলিশ তদন্ত শুরু করল? প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের। পুলিশের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলে হাইকোর্টের বক্তব্য, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তো স্কেচম্যাপ ইত্যাদির প্রয়োজন ছিল। সেই সঙ্গে আরও একগুচ্ছ প্রশ্নও তুলেছে হাইকোর্ট। ফোটোগ্রাফ কোথায়? আইসি সঞ্জীব ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন? এমনই বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত।
মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী সোমবার। হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার একক বেঞ্চে মামলাটি চলছে। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী কৌস্তব বাগচি আদালতে প্রশ্ন তুলেছেন, মৃত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রীর সরাসরি অভিযোগের পরেও কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি? এদিকে শুক্রবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানান, ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে।
ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর হত্যা মামলায় এর আগেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল হাইকোর্ট। খুনের ঘটনায় শুরুতেই এফআইআর নেওয়া হয়নি। সেই কথাও এর আগের শুনানিতে উঠে এসেছিল আদালতে। তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে, কী তদন্ত হয়েছে, সেই সব জানতে চেয়ে কেস ডাইরি তলব করেছিল হাইকোর্ট। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে সেই রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার হাইকোর্টকে জানিয়েছেন, ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তপন কান্দু খুনের ঘটনায় শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। বিশেষ করে তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু সরাসরি অভিযোগ তুলেছিলেন ঝালদা থানার আইসির বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশ সুপারকে মৃত কাউন্সিলরের স্ত্রী যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাতেও আইসির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। উল্লেখ্য, পরবর্তী সময়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তরফে এক সাব ইনস্পেক্টর সহ পাঁচ পুলিশকর্মীকে ক্লোজ করা হয়েছিল।
কংগ্রেসের থেকে শুরু থেকেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ রয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল শিবির আবার বিষয়টিকে পারবারিক সংঘাত হিসেবে ব্যাখ্যা করছে। তবে ঝালদা পুরসভার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে, কাউন্সিলরের খুনের ঘটনায় রাজ্যের শাসক দলের উপর চাপ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস। ঝালদা পুরসভার মোট ১২ টি আসন। সদ্য সমাপ্ত পুরভোটে ঝালদায় ৫ টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ৫ টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। বাকি দু’টি আসন জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থীরা। এই ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতির মধ্যে ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর মৃত্যুতে ক্রমেই চড়ছে রাজনীতির পারদ।
Be the first to comment