গরু পাচার-কাণ্ডে বারবার তলব করা হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। কোনও বারই হাজিরা দেননি তিনি। এবার পঞ্চমবার তলব করা হল তাঁকে। শনিবার ফের অনুব্রতকে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। সম্প্রতি রক্ষাকবচ চেয়ে যে আর্জি তিনি আদালতে করেছিলেন, তা খরিজ হয়ে যায়। পাশাপাশি, তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাই এবার তিনি আর হাজিরা এড়াতে পারবেন না বলেই সিবিআই আধিকারিকদের দাবি। আগামী ৬ এপ্রিল তলব করা হয়েছে তাঁকে।
গরু পাচার-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে অনুব্রত-র কী যোগ রয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই বারবার তলব করা হচ্ছে অনুব্রতকে। এ ছাড়া অনুব্রত শুধুমাত্র বীরভূমের জেলা সভাপতিই নন, তিনি কার্যত ওই জেলার সর্বেসর্বা। আর ওই বীরভূমের সঙ্গে গরু পাচারের বিশেষ যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই বীরভূম হয়েই মুর্শিদাবাদে পাঠানো হত গরু, সেখান থেকেই পাচার করা হত। কোটি কোটি টাকার এই পাচারের ক্ষেত্রে অনুব্রত-র সঙ্গে কোনও আর্থিক যোগ ছিল কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে চান সিবিআই আধিকারিকরা।
২০২১ থেকে একাধিকবার তলব করা হয়েছে অনুব্রতকে। কখনও তিনি জানিয়েছেন নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে তিনি ব্যস্ত, আবার কখনও জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেতে পারছেন না। এরই মধ্যে মামলা হয় আদালতে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, সব পক্ষের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে আবেদনকারী অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল বোলপুরের বাইরেও যাচ্ছেন। তাঁকে হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে। শারীরিক কারণে কলকাতাও গিয়েছেন তিনি। মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্যে কোথাও এমন পরিস্থিতির উল্লেখ নেই যে আবেদনকারীকে গৃহবন্দি বা হাসপাতালে থাকতে হবে। পরে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে যান অনুব্রত মণ্ডল। শুনানিতে তাঁর আইনজীবীরা আর্জি জানান, যাতে আদালতের রক্ষাকবচ দেওয়া হয় তাঁকে থাকে। কিন্তু সেই রক্ষাকবচ দেওয়া হয়নি। একদিকে, বগটুই-হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে নাম উঠে আসছে অনুব্রত মণ্ডলের। তারই মধ্যে এই সিবিআই তলব নতুন করে চাপ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Be the first to comment