খবরটা এসেছিল শুক্রবার। রামপুরহাট গণহত্যার তদন্তে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। সে জানায় ভাদু শেখ খুনে মূল অভিযুক্ত পলাশ শেখের বাড়ির কাছের ফাঁকা মাঠে মজুত রয়েছে বোমা। ছেলেটির সেই কথার উপর ভিত্তি করেই শনিবার বোম স্কোয়াড আসে পলাশ শেখের বাড়িতে। যন্ত্রপাতি দিয়ে বোমা কোথায় রয়েছে সেই অনুসন্ধানও করে তারা। ইঙ্গিত মেলে বোমের। পলাশ শেখের বাড়ি লাগোয়া উঠোনেই হদিশ মিলে একটি নীল ড্রামের। তার মধ্যেই বোমগুলি রাখা ছিল। অভিযোগ, এরপরও আসেনি বোম ডিফিউজাল স্কোয়াড। এখানেই উঠছে প্রশ্ন! একটা গোটা রাত বারুদের স্তুপের উপর কাটিয়ে দিল ওই এলাকার বাসিন্দারা। বোমের ইঙ্গিত পাওয়ার পরও কেন গতকালই এলাকায় বোমা নিষ্কৃয় করতে পৌঁছায়নি বোম ডিফিউজাল স্কোয়াড? ২৪ ঘণ্টা কাটিয়ে রবিবার কেন তারা বোমা নিষ্কৃয় করল সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে।
ঠিক ১৩ দিন আগে এই এলাকায় যেখানে পুড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে এতগুলো প্রাণ। গোটা রাজ্যের নজর যখন এই ঘটনার উপর, ক্রমাগত যখন তদন্ত চলছে ঠিক তখন বোম স্কোয়াডের এহেন কাজে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। কী হয়…কী হয় আতঙ্কে একটা গোটা রাত কাটিয়েছেন বকটুইয়ের বাসিন্দারা। আজ ওই এলাকা থেকে ২০টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। যদি কোনও অঘটন ঘটে যেত তার দায় ঠিক কে নিত? এমনই প্রশ্নও আনাগোনা করছে এখন।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই বোমা উদ্ধার ঘিরে আরও সক্রিয় হয়েছে জেলা প্রশাসন। বীরভূমের একধিক জায়গা থেকে ইতিমধ্যে উদ্ধার হয়েছে বোমা। সূত্রের খবর, বোম ডিউজাল স্কোয়াড নাকি সেই কাজেই অন্য জায়গায় ব্যস্ত ছিল। সেই কারণ দেখিয়ে তারা শনিবার পলাশ শেখের বাড়িতে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার দিনই খবরে আসে পলাশ শেখের বাড়ির পাশের ফাঁকা জমিতে মজুত রয়েছে বোমা। এর ঠির ২৪ ঘণ্টা পর অর্থাৎ আজ বিশেষ পোশাক পরে এলাকায় আসেন বোম ডিফিউজাল কর্মীরা। এরপর এক বালতি বোমা উদ্ধার করে এলাকা থেকে। পাশাপাশি দমকলের একটি ইঞ্জিনও আজ এসে পৌঁছায় সেখানে। যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাহলে যাতে পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা যায় সেই কারণে সেখানে উপস্থিত হন দমকল আধিকারিকরা। এলাকায় পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দেন তাঁরা। পাশাপাশি উপস্থিত ছিল এদিন এলাকায় উপস্থিত ছিলেন ওই এলাকার এসডিপিও।
প্রসঙ্গত, বগটুই গণহত্যার পরই বীরভূমের একাধিক জায়গা থেকে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০০-রও বেশি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বগটুই সহ আশেপাশের এলাকায় এই ধরনের বোমা তৈরি করা হয়, প্লাস্টিকের ড্রামেই মজুত করে রাখা হয় সেই বোমা। সদ্য গ্রামে ফেরত আসা বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই পুলিশ জানতে পারে যে, এলাকায় আরও বোমা মজুত থাকতে পারে। এরপরই পুলিশ পলাশ শেখের বাড়ির কাছে তল্লাশি চালায়। সন্দেহজনক ড্রাম নজরে আসতেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়, বসানো হয় পুলিশি পাহারাও।
Be the first to comment