জ্বালানির লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির জেরে সরাসরি টান পড়ছে গেরস্থের হেঁশেলে। মাছ-মাংস-সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় যে কোনও পণ্যের দামই আকাশছোঁয়া। বাজার করতে গেলে হাত পুড়ছে আমজনতার। আমআদমির এই বিড়ম্বনা নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদাসীনতার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। গতকালই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে আজব সাফাই দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ পুরী। বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির সঙ্গে তুলনা করে এদেশে পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধিকে নগণ্য বলে দাবি করেছেন। তাঁর মন্তব্যের পরই কেন্দ্র সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আদৌ কতটা আন্তরিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে, এবার আমজনতার সমস্যা মেটাতে সক্রিয় হল রাজ্য সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কৃষি বিপণন দপ্তরের প্রতিনিধিরা, বাজার কমিটির সদস্যরা, পুলিশ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স। নবান্ন সূত্রের খবর, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যবাসীকে মূল্যবৃদ্ধির নাগপাশ থেকে মুক্তি দিতে চান তিনি।
রমজান মাস চলছে। এর মধ্যে যেভাবে ফল-সবজির দাম বাড়ছে, তাতে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি চিঠি লিখেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি। অর্থাৎ মূল্য-বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের হস্তক্ষেপের একটা দাবি বিরোধী শিবির থেকেও এসেছে। তবে শুধু সংখ্যালঘু নয়, মূল্যবৃদ্ধির জেরে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সবস্তরের মানুষকেই। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সাধারণ মানুষের অসুবিধা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সেকারণেই বৃহস্পতিবার থেকে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কোমর বেঁধে নেমে পড়তে চায় রাজ্য সরকার।
শুধু মূল্যবৃদ্ধি নয়, রমজান মাসে রাজ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার দিকেও জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবছর রমজানের মধ্যেই রামনবমী পড়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, রমজানের মধ্যেও যারা যারা রামনবমীর মিছিল করতে চায়, তাদের সবাইকে অনুমতি দেওয়া হবে। কাউকে বাধা দেওয়া হবে না। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকেই এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, কোনওরকম অশান্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment