ফের মাওবাদীদের নামে পোস্টার জঙ্গলমহলের একাধিক জায়গায়। পোস্টার পড়ল বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল এলাকায়। তাতে হুঁশিয়ারির সুরে লেখা – ৮ তারিখ বাংলা বন্ধ পালন না করলে মৃত্যুদণ্ড হবে। দুই জেলাতেই একই বয়ান-সহ পোস্টার উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার বেলপাহাড়িতে একটি ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের খবরও মিলেছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে বম্ব স্কোয়াড। সতর্ক দুই জেলার পুলিশ।
রাজ্য সরকার দুষ্কৃতীদের স্পেশ্যাল হোমগার্ডে চাকরিতে নিয়োগ করেছে। এই অভিযোগ তুলে আগামী ৮ তারিখ বাংলা বন্ধের ডাক দিয়েছে মাওবাদীরা। তার আগে চলতি সপ্তাহ থেকেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় উদ্ধার হয়েছে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার। তাতে লেখা – “রাজ্য সরকারের দুর্নীতির ক্রিমিনালদেরকে স্পেশ্যাল হোম গার্ড এ চাকরি দেওয়া হল কেন? তার প্রতিবাদে আগামী 8 এপ্রিল তারিখে সারা বাংলা বন্ধ পালন করুন”। বন্ধ না মানলে মৃত্যুদণ্ডের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সিপিআই মাওবাদীদের নাম সই করা।
রাইপুর ব্লকের ঢেকো পঞ্চায়েতের খয়েরবনি গ্রামে বুধবার এই পোস্টারটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে লেখা রয়েছে তাদের বার্তা। খবর পেয়ে বক্সী ফাঁড়ির পুলিশ ওই গ্রামে গিয়ে পোস্টারটি উদ্ধার করে।দীর্ঘদিন পরে ফের মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, ঝাড়গ্রামের সীমানা ঘেঁষা রাইপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ জঙ্গলমহল এলাকা একসময় মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। ফলে এই এলাকায় আবারও মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক বেড়েছে। অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামের কাঁকো ও খামার এলাকার একাধিক জায়গাতেও একই পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। বলা হচ্ছে, পোস্টারের বয়ানের ধরন মনে করাচ্ছে, আগেকার অশান্ত দিনগুলির কথা। বৃহস্পতিবার আবার সেই বেলপাহাড়ির লবণীতে ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসনের।
২০১১ সালে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এখন জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। জঙ্গলমহলে বহু মাওবাদী নেতা ও লিংকম্যান এখন সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছেন। অনেকে রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরি করছেন। এই অবস্থায় জঙ্গলমহলে ফের মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোস্টার পড়ার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জেলা পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, পোস্টারগুলি আদৌ মাওবাদীদের কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Be the first to comment