সুবর্ণ জয়ন্তী পেরিয়ে এলো ঐতিহ্যশালী প্রাচীন কলাকেন্দ্র, চন্ডিগড়। প্রাচীন কলাকেন্দ্র-এর উদ্যোগে সম্প্রতি চন্ডিগড় টেগোর হলে শেষ হলো ৫১তম ভাস্কর রাও নৃত্য ও সঙ্গীত সম্মেলন। সাত দিন ব্যাপী এই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বর্ণময় আসরটি উদ্বোধন করেন মাননীয় রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিত। কেন্দ্রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এস কে মোংগা, ডঃ শোভা কোসার, আশুতোষ মহারাজন, যশপাল সি়ং, সজল কোসার প্রমুখ। গুণীজন সম্মাননা পর্বের পর মূল অধিবেশনের শুভ সূচনা করেন তালযোগী পণ্ডিত সুরেশ তলওয়ালকর। সঙ্গে ছিলেন তাঁর শিষ্য ও কন্যা শ্রাবণী তলওয়ালকর (তবলা), নাগনাথ আদগাওনকর(কন্ঠ), অভিষেক সিনকর (হারমোনিয়াম) পরাঞ্জে (কজন ও পাদন্ত) এবং ঋতুরাজ হিংগে (কালবাস)।
পণ্ডিতজীর নির্বাচনে ছিল পেসকার ও পঞ্জবী কায়দা,রাগ সোহিনী, চক্রদার ইত্যাদি। কলকাতা থেকে এসেছিলেন সরোদিয়া পণ্ডিত দেবাশিস ভট্টাচার্য। পিতা শ্যামসুন্দর ভট্টাচার্য ছাড়াও তাঁর গুরুর তালিকায় আছেন পণ্ডিত রাধিকা মোহন মৈত্রের শিষ্য রবি লাহা ও সরোদশিল্পী পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। সেনিয়া সাহজানপুর ঘরের এই শিল্পী ঝিঝিট রাগে তার আসর শুরু করেন। এই রাগটি খাম্বাজ ঠাটের। পরে শোনান কলাবতী ও মিশ্রপিলু। কলকাতাবাসী সেতারি পার্থ বোস ছোটবেলা থেকেই মাইহার ঘরানার শিল্পী মনোজ শঙ্করের শিষ্য।
পণ্ডিত রবিশঙ্কর ও পণ্ডিত নিখিল ব্যানার্জির বাদনশৈলীর সঙ্গে মিশেছে তাঁর বাদনধারা। বেহাগ (আলাপ,জোড়,ঝালা, বিলম্বিত তিনতাল,মধ্যলয় ও গৎকারি) ছাড়াও বাজিয়েছেন মিশ্র কাফি ঠুমরি। ডঃ তুলিকা ঘোষ পদ্মভূষণ তবলাশিল্পী পঃ নিখিল ঘোষের কন্যা। বংশীবাদক পান্নালাল ঘোষও তাঁর নিকট আত্মীয়। কন্ঠে তুলিকার নিবেদন রাগ শ্রী। পরে শোনান রাগমালিকা যাতে রয়েছে বারোটি ভিন্ন ভিন্ন রাগ। বনারস ভজনে সমাপন করেন। পিতা ও পুত্রের দ্বৈত বংশীবাদনে ছিলেন পণ্ডিত প্রভিন গুড়খিন্ডি ও সরোজ গুড়খিন্ডি। এদের উজ্জ্বল উপস্থাপনায় ছিল রাগ যোগ ও মিশ্র পাহাড়ি।
এছাড়া উল্লেখ্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন রাহুল শর্মা (সন্তুর), সঞ্জিব অভয়ংকার, পণ্ডিত শৌনক অভিষেক (কন্ঠ), পণ্ডিত যোগেশ সামসি (তবলা : তিন তাল)। শেষ দিনে ছিলেন মোহনবীণাবাদক পঃ বিশ্বমোহন ভাট। তিনি প্রথমে শোনান তাঁর সৃষ্ট রাগ বিশ্বরঞ্জনী যা মূলত শিবরঞ্জনী ও মধুবন্তীর মিশেলে। পরে পুত্র ও শিষ্যদের ডেকে উপহার দেন ফিউশন: যোগজ্যাজ। সমগ্র অনুষ্ঠান উৎসর্গ করেন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এম এল কোসারের উদ্দেশে। বৈচিত্র্যময় কুচিপুড়ি নৃত্য প্রদর্শন করেন বৈজয়ন্তী অ্যান্ড ট্রুপ। একক ভারতনাট্যমে ছিলেন ডঃ পদ্মজা সুরেশ। এছাড়া তবলা, হারমোনিয়াম, তানপুরা ইত্যাদিতে যোগ্য সহায়তা দেন উস্তাদ সাবির খাঁ, সুব্রত দে, রাজেন্দ্রপ্রসাদ ব্যানার্জি, পঃ রামকুমার মিশ্র, দুর্জয় ভৌমিক,অভিষেক মিশ্র, পারমিতা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন সমীরা কোসার। তিনি নিজেও একজন নৃত্যশিল্পী।
Be the first to comment