কোভিডের সময়ে দু’বছর রাজ্যে তেমন একটা বাড়াবাড়ি করেনি মশাবাহিত রোগ। কিন্তু করোনা প্রায় চলে যাওয়ার ঠিক আগে চলতি বছরে কিছুটা হলেও অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু। কিছু জেলায় এর সঙ্গেই রয়েছে আবার কালাজ্বর। তাই ঝুঁকি কমাতে বর্ষার আগেই স্বাস্থ্যদপ্তর ও কলকাতা পুরসভায় তৎপরতা শুরু হয়েছে মশাবাহিত রোগ নিয়ে।
ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, এমনকী, কালাজ্বর নিয়েও গ্রীষ্মের শুরুতেই সতর্ক স্বাস্থ্যভবন। শুক্রবার মশাবাহিত রোগ নিয়ে একটি বৈঠকের পর ঠিক হয়েছে, মশাপ্রবণ সব ক’টি এলাকায় এবার থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সার্ভের এলাকা নিয়ে একটি তালিকাও তৈরি হয়েছে। এদিন স্বাস্থ্যভবনের শীর্ষস্থানীয় কর্তারা সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে একটি ভিডিও বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে স্বাস্থ্যকর্তারা নির্দেশ দিয়েছেন, মশাবাহিত অসুখে রাশ টানতে এখন থেকেই তৎপর হতে হবে সব পক্ষকে।
মার্চের গোড়ায় কলকাতা-সহ সব জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, নিজের নিজের এলাকায় সবচেয়ে মশাপ্রবণ এলাকা ধরে একটি মানচিত্র তৈরি করতে। সেই মানচিত্র তৈরি হতে দেখা গিয়েছে, কলকাতা ও পাঁচটি স্বাস্থ্যজেলা-সহ মোট ২৮টি জেলায় এমন এলাকার সংখ্যা ৮৭৬টি যার মধ্যে ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তুলনায় বেশি ১৯০টি জায়গায়। এর মধ্যে কলকাতায় রয়েছে ২২টি এবং দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতে রয়েছে ৩৮টি করে জায়গা। মূলত এই সব এলাকা থেকেই এবার থেকে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সার্ভে ও লার্ভা সংগ্রহের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। প্রতি মাসে এমন ৮৭৬টি জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে।
চলতি বছরেও দেখা যাচ্ছে, গত বছরের মতো ডেঙ্গুর চেয়ে উৎপাত বেশি ম্যালেরিয়ার। এ বছর এখনও পর্যন্ত শুধু কলকাতা পুর এলাকাতেই ৫৭ জনের ডেঙ্গু ও ২২৮ জনের ম্যালেরিয়া ধরা পড়েছে। কলকাতা লাগোয়া শহরতলি ও অন্যান্য জেলার ছবিও কমবেশি একই রকম। কালাজ্বরও দেখা গিয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে। বৈঠকের পর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পুরকর্তাদের অবিলম্বে বাড়ি বাড়ি নিয়মিত সার্ভে করার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
Be the first to comment