তাপপ্রবাহে পুড়ছে বাংলা। গরম হাওয়ার হলকায় অস্থির মানুষ। তাপপ্রবাহে মরুরাজ্য রাজস্থানের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে বাংলার একাধিক জেলা। আজ বাঁকুড়া, পানাগড়ের তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি পার করেছে। ৪০ ডিগ্রি পার হয়েছে দমদম, ব্যারাকপুরও। গরমে পুড়ছে কলকাতাও। এই মুহূর্তে তাপপ্রবাহের এই চরম অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন। এই অবস্থায় অগামিকাল সচিব পর্যায়ের বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে রাজ্যের সমস্ত দফতরের সচিব ও জেলাশাসকদের যেমন ডাকা হয়েছে, একইভাবে উপস্থিত থাকবেন সমস্ত জেলার পুলিশ সুপাররাও ।
প্রসঙ্গত, শুধু গরম নয় নবান্নের জন্য চিন্তার কারণ জলও। প্রায় দু’মাস হতে চলল বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গে। এই পরিস্থিতির দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলার ৭২টি ব্লকে জলস্তর নেমে যাওয়ায় চিন্তা বেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ৩৪৩টি ব্লকের মধ্যে ৪২টি ব্লক আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়াও আরও ৩০টি ব্লককে আংশিক আশঙ্কাজনক বলা হচ্ছে। আগামীকাল সবকিছু নিয়েই আলোচনা হতে পারে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
মোটের ওপর তাপপ্রবাহ নিয়ে চিন্তিত রাজ্য। সাধারণ মানুষকে এই নিয়ে সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, তৃষ্ণার্ত না হলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর জল খান। পানীয় জল সঙ্গে রাখুন। ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। টুপি, কাপড়, তোয়ালে বা ছাতায় মাথা ঢাকুন। হালকা খাবার, জলীয় অংশ বেশি আছে এমন ফল, বাড়িতে তৈরি লেবুজল খান। ঘর ঠান্ডা রাখুন। অসুস্থ হলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
এ দিকে এই গরমে শিশুদের অবস্থা নিয়েও চিন্তিত রাজ্য। ইতিমধ্যেই জেলাশাসক, স্কুল পরিদর্শকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষকে যোগাযোগ রেখে চলার পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য সরকার। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গরমের মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের গাইডলাইন বা নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
একই ভাবে লিফলেট তৈরি করে জেলা প্রশাসনকেও প্রচারের নির্দেশ দিল নবান্ন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষকেও নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবেই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রকৃতির উপর সাধারণত কারও হাত নেই। তবে একমাত্র সতর্কতাই মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে।
Be the first to comment