রাজ্য বিজেপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে দিল্লির জোড়াতালি ফর্মূলায় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ‘গিলতে’ বাধ্য হলেন সুকান্ত-অমিতাভ শিবির। শুধু গলাধকরণ নয়, হুগলির সাংসদ লকেটকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর নিজের কেন্দ্র চুঁচুড়ায় বৃহস্পতিবার আইন অমান্যে শামিল হলেন সুকান্তরা। পাশে ছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও।
আগামী ৪ মে রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বঙ্গ নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন তিনি। কিন্তু শাহ যে সময়ে রাজ্যে আসছেন তখন বঙ্গ বিজেপি কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে সুকান্ত মজুমদার, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী-সহ নব্য ও তৎকাল বিজেপি, অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ ও লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ পুরানো নেতা,কর্মীদের হয়ে ব্যাট ধরেছেন। দলে ফাটল নেই সাধারণ কর্মী,সমর্থকদের সেই বার্তা দিতেই দিল্লির নেতৃত্বের নির্দেশে দিলীপ ও লকেটকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার মিছিলে হাঁটলেন সুকান্ত মজুমদাররা।
দীর্ঘদিন পর নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় কর্মসূচিতে এদিন স্বমহিমায় দেখা গিয়েছে লকেটকে। একুশের ভোটে বিপর্যয়। তারপর একের পর এক নির্বাচনে হারের জেরে জেলায় জেলায় বিদ্রোহ ও ক্ষোভ-বিক্ষোভের আগুনে ছাড়খার বঙ্গ বিজেপি। গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার গোটা গেরুয়া শিবির। বাদ পড়া দলের পুরনো নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ শিবিরের পক্ষে সওয়াল করায় লকেট চট্টোপাধ্যায়কে কার্যত একঘরে করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল বঙ্গ বিজেপির শাসক শিবিরের একাংশ। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ডাকা হচ্ছিল না হুগলির সাংসদকে।
সম্প্রতি নাম না করে লকেটকে উদ্দেশ্য করে সুকান্ত বলেছিলেন, “সব মিটিংয়ে সকলকে ডাকতে হবে এরকম কোনও কথা নেই।” সূত্রের খবর, বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরে আনেন লকেট। দেখাও করেন মোদি, শাহ ও নাড্ডার সঙ্গেও। এরপরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বার্তা দেয়, অমিত শাহর সফরের আগে রাজ্যে দলের কর্মসূচি ঐক্যবদ্ধভাবে তুলে ধরতে হবে। বস্তুত সে কারণেই এদিন চুঁচুড়ার মিছিলে একই ফ্রেমে তিন শীর্ষ নেতৃত্বকে হাজির করতে বাধ্য হয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
এক সাক্ষাৎকারে এদিন দিলীপ ঘোষ প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের কামিনী-কাঞ্চন বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন। বলেন,“যাঁরা এসব বলছেন তাঁরা তথ্য প্রমাণ দিন। আর এখানে কেউ টাকা কেউ নেয়নি এমন গ্যারান্টি আমি দিচ্ছি না।” অনুব্রতর গাড়ি চালকের দুর্ঘটনা নিয়েও ফের মুখ খোলেন দিলীপ। বলেন,“রাজনীতিতে দুর্ঘটনা ঘটানো হয়।” দলে নবাগত শুভেন্দু অধিকারীদের উদ্দেশ্যে নাম না করে তাঁর বক্তব্য,“২০১৯-এর পর যাঁরা বিজেপিতে এসেছেন তাঁরা যে ঠিক তার প্রমাণ দিতে হবে।”
Be the first to comment