কয়েকদিন আগেই দেশের বেশ কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত আমলা দেশ জুড়ে ঘৃণ্য রাজনীতির নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী নীরবতার জন্যই দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। এবার তারই পালটা চিঠি দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আমলা ও পুলিস অফিসারদের একটা বড় অংশ প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ওই আমলাদের চিঠির নিন্দা করলেন। প্রধানমন্ত্রীকে লেখা ওই খোলা চিঠিতে মোট ১৯৭ জন স্বাক্ষর করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৮ জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, ৯৭ জন অবসরপ্রাপ্ত আমলা এবং ৯২ জন অবসরপ্রাপ্ত পুলিস অফিসার।
এই চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গও তুলে ধরে বলা হয়েছে, ওই স্বঘোষিত কনস্টিটিউশনাল কনডাক্ট গ্রুপের সদস্যরা(অবসরপ্রাপ্ত আমলা) এব্যাপারে সম্পূর্ণ নীরব। অথচ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্যই কলকাতা হাইকোর্ট জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ভোট পরব্রতী হিংসা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলে। সেই তদন্তে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে।
চিঠিতে এই বিশিষ্টজনদের আরও বক্তব্য, একইভাবে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ গুজরাত এবং দিল্লিতে সম্প্রতি রাম নবমী, হনুমান জয়ন্তী এবং অন্যান্য উৎসবকে ঘিরে যেসব হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলি সম্পর্কেও ওই স্বঘোষিত গ্রুপের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করার মতো। ওইসব হিংসাত্মক ঘটনায় সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। চিঠিতে হাবি করা হয়েছে, বিজেপি সরকারের আমলে দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা অনেক কমে এসেছে। সরকারের এই ভূমিকাকে মানুষ প্রশংসাও করে।
চিঠিতে আরও অভিযোগ, ওই স্বঘোষিত গ্রুপ বিভিন্ন নন-ইস্যুকে ইস্যু করে তুলে দ্বিচারিতা করছে। নানা বিত্রকিত মন্তব্য করে তারা আন্তর্জাতিক স্তরে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইছে। একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম গুজব এবং অপপ্রচার চালনো হচ্ছে। চিঠির স্বাক্ষরকারীরা মনে করছেন, তাদের এই আচরণের ফলে জাতিয়তা বিরোধী মনোভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। একইসঙ্গে এর জন্য অতিবাম চরমপন্থী কাজকর্ম এবং নানা ধর্মীয় জিগির মাথা চাড়া দিচ্ছে। এটা তাদের করা উচিৎ নয়।
ওই চিঠিতে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক হিজাব এবং হালাল বিতর্কও। অভিযোগ, সংকীর্ণ স্বার্থে কোনও কোনও মহল এসব নিয়ে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে ভারতের উন্নতি না হয়। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দেশকে হেয় করার একটা প্রচেষ্টা চলছে।
চিঠির আরও বক্তব্য, এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও আমলারা দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পরিবেশ সৃষ্টিতে মদত দিচ্ছেন। এর ফলে দেশ দুর্বল হয়ে পড়বে। এই অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের এখন আত্মদর্শন করার সময় এসেছে। তাঁদের আমলে দেশের কী অবস্থা ছিল, তা ভেবে দেখা উচিত। ওই চিঠিতে এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ খুলে দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আমলাদের বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। এই চিঠি লেখার পিছনে বিজেপির সম্পূর্ণ মদত রয়েছে।
Be the first to comment