রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে তুঙ্গে উঠল নবান্ন-রাজভবন সংঘাত। বর্তমান উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় টুইটে নতুন উপাচার্য নিয়োগের কথা জানিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। সার্চ কমিটির সুপারিশে প্রথমে নাম থাকা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপক মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নাম তিনি বেছে নিয়েছেন। রাজ্য সরকার যখন বিধানসভায় বিল এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছে, তখন কেন রাজ্যপাল আগ বাড়িয়ে উপাচার্য়ের নাম জানিয়ে দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকদল।
শনিবারও রাজভবন থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিবৃতিতে রাজ্য সরকারের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইটে বলেন, রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি সস্পর্কে রাজ্য সরকারের বক্তব্য ৩০ জুনই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যপালের অভিযোগ, রাজ্যের ২৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার আচার্য হিসেবে তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষই আইন এবং বিধি মেনে চলতে বাধ্য। যতক্ষণ না আইনের পরিবর্তন না ঘটছে, ততক্ষণ মানুষের সেই আইন মেনে চলা উচিত। কিন্তু রাজ্যপাল সে সব কিছু মানবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনও মানছেন না। ওই আইন মেনেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে।
শনিবার তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইটে লেখেন, রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালকে সরিয়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার ব্যাপারে বিল পাশ করানো হয়েছে। কুণালের মতে, রাজ্যপাল এখন পূর্বতন আচার্য। তিনি কী করে উপাচার্যের নাম ঘোষণা করেন, প্রশ্ন কুণালের। তিনি বলেন, রাজ্যপালের এই আচরণ অনৈতিক এবং অগণতান্ত্রিক।
রাজভবনের প্রেস বিবৃতিতে কুণালের বক্তব্যেরও সমালোচনা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, শাসকদলের মুখপাত্র ঠিক কথা বলেননি। যে বিলগুলির কথা বলা হয়েছে, রাজ্যপাল আরও ব্যাখ্যা চেয়ে সেগুলি বিধানসভার সচিবালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বিধানসভার সচিবালয় অসম্পূর্ণ ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন। ওই বিবৃতিতে রাজ্যপাল শাসকদলকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর অনুমোদন ছাড়াই ২৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্য সরকার বেআইনিভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছে।
Be the first to comment