একটা সামান্য মুড়ি, আর সেটাই একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ মঞ্চে বড় ভূমিকা নিয়ে ফেললো। প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে তৃণমূল নেত্রী নিজে মঞ্চ থেকে মুড়ি চেয়ে পাঠালেন। আর তাঁর হাত ছোঁয়ানো মুড়ি ‘প্রসাদ’ হয়ে ফিরে আসছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে। ২১ জুলাই ধর্মতলার জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় রসদ হিসেবে কিছু মুড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন আউশগ্রামের তেলোতা গ্রামের যুব তৃণমূল কর্মী দেবাশিস মুখোপাধ্যায় ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মী।
সভা শেষ করে ফেরার পথে দেখা যায় মুড়ির থলেটি কোলে নিয়ে বসে রয়েছেন দেবাশিস। কাছছাড়া করতে চাইছেন না। বলছেন, দিদির হাত ছোঁয়ানো মুড়ি আর খাইনি কারণ, এটা এখন আমাদের কাছে প্রসাদ। এই প্রসাদ আমাদের এলাকায় সব কর্মীদের মধ্যে বিলি করে দেওয়া হবে।
ধর্মতলার জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর এক জনবিরোধী নীতি তুলে ধরে তোপ দাগেন। জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নির্দেশিকার কথা তুলে ধরেন। বক্তব্যের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত শ্রোতাদের থেকে কিছু মুড়ি চেয়ে নেন। মজাচ্ছলে মমতা বলেন, তোমাদের মধ্যে কে মুড়ি সঙ্গে এনেছো, আমায় দাও। আবার আমি ফেরত দিয়ে দেব। মঞ্চের কাছাকাছি গ্রামের কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে ছিলেন তেলোতা গ্রামের দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। তিনি সঙ্গে নিয়ে যাওয়া মুড়ির ছোট বস্তাটি বাড়িয়ে দেন।
সেখান থেকে কিছু মুড়ি নিয়ে একটি থালায় করে বাড়িয়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। ওই মুড়ির থালা হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, বলুন তো, মুড়ির উপরেও জিএসটি? কেউ মুড়িও খেতে পারবেন না? এরপর ওই মুড়ি আবার দেবাশিসদের কাছে ফিরে আসে। জানা যায়, আউশগ্রাম ১ ব্লক যুব তৃণমূলের ব্লক কমিটির সদস্য দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। শহিদ দিবসের সভায় তাঁরা প্রায় ৩০ জনের একটি দল গিয়েছিলেন ট্রেনে। দেবাশিসের সঙ্গী নিরঞ্জন পাল, সন্দীপ বাউড়ি, অসীম বাউড়িরা বলেন, সভায় গিয়ে টিফিন করার জন্য এই মুড়ি আমরা নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু দিদি আমাদের কাছে মুড়ি চাইবেন এটা আমাদের কাছে স্বপ্ন।
দেবাশিস বলেন, এর আগেও অনেক সভায় গিয়েছি। কিন্তু নেত্রীর সঙ্গে এভাবে মুখোমুখি হওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। তারওপর দিদির হাতছোঁয়ানো মুড়ি আমাদের কাছে প্রসাদ। এর চেয়ে বড় পাওনা আর কি হতে পারে?
Be the first to comment